নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গৃহকর্মী কিশোরীকে প্রায় ৮ মাস যাবত মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার নারী ও শিশু দমন নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ নির্যাতিত কিশোরী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত উরুস আলী ছেলে হুমায়ুন মিয়া (২২) সিলেট উপশহর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। প্রায় ৮ মাস পূর্বে হুমায়ুন মিয়া নিজ গ্রামের পাশর্^বর্তী মিছকিনপুর এলাকার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে তার বাসায় গৃহকর্মীর কাজের জন্য সিলেট উপশহরের বাসায় নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে মেয়েটির সাথে প্রেমের অভিনয় করে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন হুমায়ুন মিয়া। কয়েক মাসে একাধিক বার ধর্ষণে মেয়েটি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মেয়েটি বিয়ের জন্য একাধিকবার হুমায়ুনকে চাপ দেয়। এতে হুমায়ুন গর্ভ নষ্ট করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু মেয়েটি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে অনিহা প্রকাশ করলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু হয়। গত ১৭ আগস্ট বিকেলে মেয়েটি আবারো বিয়ের জন্য চাপ দিলে হুমায়ুন তার শয়নকক্ষে মেয়েটিকে বেঁধে মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ১৮ আগস্ট ভোরবেলা নির্যাতিত মেয়েটিকে নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা বিদ্যুত পাওয়ার প্ল্যান্টের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় হুমায়ূন মিয়া।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার করেন। কিশোরী মেয়েটি বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কিশোরী গৃহকর্মীর মা বলেন, আমাদের দারিদ্র্যতার সুযোগে হুমায়ুন মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এতে মেয়েটি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়। হুমায়ুন মিয়া আমার মেয়ের গর্ভ নষ্ট করার জন্য তার উপর অমানবিক নির্যাতন করায় সে গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমার মেয়েকে যাতে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে না পারি এর জন্য অভিযুক্ত হুমায়ুনের লোকজন হাসপাতালে তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, মামলার বিষয়টি এখনো জানি না। তবে আদালতে মামলা হতে পারে, আদালতের আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।