নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের ভড়ারী মৌজায় অবস্থিত ছাতল বিলের ইজারা নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ১৯ আগস্ট দুপুরে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে ছাতল বিলের ইজারা দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। এ বিলের ইজারাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে কিম্মত মিয়াসহ অন্যান্য ১৩ সদস্য ও মৃত এক সদস্যের জাল স্বাক্ষর করে ইজারা ডাকে অংশগ্রহনের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল ও সরেজমিনে তদন্তে তদন্ত কমিটি জাল স্বাক্ষর প্রদানের সত্যতা পাওয়ার পরও বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে ছাতল বিলের ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্তে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন নবীগঞ্জ উপজেলার বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে এবং না জানিয়ে জলমাহাল ইজারা ডাকে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তৌহিদ-বিন হাসান বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ১৩ জন সদস্য। সমিতির সদস্য কিম্মতসহ ১৩ জন সদস্য এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও অভিযোগকারীদের না জানিয়ে তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সমিতির অন্যান্য সদস্যরা জলমহাল ইজারা ডাকে অংশ নেয়। ইজারা ডাকের বিষয়ে কিছু তারা জানেন না বলেও উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও জলমহাল সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় জড়াতে চান না দাবি করে অভিযোগে আরো বলা হয় কতিপয় মহল বছরের পর বছর ধরে তাদেরকে কোনো ধরণের মুনাফা না দিয়ে জলমহাল ভোগ করে আসছে। তাই জলমহাল ইজারায় অভিযোগকারী সমিতির সদস্যরা অংশগ্রহণ করতে রাজি নয় বলেও উল্লেখ করেন। এদিকে অভিযোগ দাখিলের পর ১৬ জুলাই সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হাফিজুল ইসলাম। প্রতিবেদনে স্বাক্ষর জাল করার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
বিজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য রুহেল মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক অবৈধ পন্থায় ইজারা নিয়ে বিল ভোগদখলের ষড়যন্ত্র করছে এটা কোনোভাবেই হতে দেয়া হবে না।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তৌহিদ-বিন হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তের জন্য সমবায় অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করি। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী সমবায় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইজারা প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু সমবায় কর্তৃপক্ষ এখনো সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বা সমিতি বাতিল করেনি সেহেতু ইজারা প্রদানের ব্যাপারে কোনো সমস্যা বা বাধা নেই।