হবিগঞ্জ শহরে কালেক্টরেট স্কুল করার পরিকল্পনা করছেন জেলা প্রশাসক

এসএম সুরুজ আলী ॥ গণমাাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের মাহমুদাবাদ এলাকার শিরিন আক্তার সোনিয়ার প্রতিষ্ঠিত মায়ের মমতা অবৈতনিক বিদ্যালয় ও জহুরা খাতুন পাঠাগার পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। তিনি শুক্রবার বিকেলে স্কুলটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং শিক্ষকরা কিভাবে ক্লাস করান তা পর্যবেক্ষণ করেন। জেলা প্রশাসক স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়ার সাথে কথা বলেন। এ সময় স্কুলটির বিভিন্ন সমস্যার কথা জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরেন সোনিয়া। জেলা প্রশাসক স্কুলটিতে সহযোগিতার আশ^াস দিয়ে প্রাথমিকভাবে ২টি ফ্যান দেয়ার আশ^াস দেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক বলেন, হবিগঞ্জে একটি কালেক্টরেট স্কুল করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। ওই স্কুলে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারিদের সন্তানসহ সকলেই লেখাপড়া করতে পারবে। সোনিয়া চাইলে সেখানে তার স্কুলের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করাতে পারবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক তাহমিনা বেগম গিনি, হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রাসেল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি প্রদীপ দাশ সাগর, সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি শাকিল চৌধুরী। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মায়ের মমতা অবৈতনিক বিদ্যালয় ও জহুরা খাতুন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন আক্তার সোনিয়া।
তিনি জানান, গত ৩০ জুলাই দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকায় আমার স্কুলটি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনসহ সর্বমহলের নজরে আসে। জেলা প্রশাসক আমার স্কুলটি সরেজমিনে দেখার সিদ্ধান্ত নেন। জেলা প্রশাসক ও হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সোনিয়া।
উল্লেখ্য, দৈনিক হবিগঞ্জ মুখ পত্রিকায় ৩০ জুলাই ‘টিউশনি করে নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রী সোনিয়া’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাসায় বাসায় গিয়ে টিউশনি করে নিজের কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন হবিগঞ্জ শহরের শিরিন আক্তার সোনিয়া নামের এক তরুণী। টিউশনি থেকে উপার্জিত টাকায় শহরের মাহমুদাবাদ এলাকায় সোনিয়া ছোট টিনের ছাপটা ঘরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মায়ের মমতা অবৈতনিক বিদ্যালয় ও তার নিজের মা জহুরা খাতুনের নামে পাঠাগার। স্কুলের নিজের অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বসার ব্রেঞ্চ ও পাঠাগারের জন্য বই ক্রয় করেছেন সোনিয়া। সোনিয়ার এমন উদ্যোগ অনেকেই মহতি উদ্যোগ বলে স্বীকৃতি দিলেও অর্থাভাবে স্কুলের পরিবেশের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে ও মানসম্মত শিক্ষা, শিক্ষকদের সম্মানীও দিতে পারছেন না সোনিয়া। এ অবস্থায় তার গড়া স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করতে সরকার ও সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা চেয়েছেন সোনিয়া।