এসএম সুরুজ আলী ॥ আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর, চুনারুঘাট সদর ও মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। গতকাল কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিসাইডিং অফিস পৌছে গেছেন। উপ-নির্বাচনে ৩টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ১৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৫ প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত ইঞ্জিনিয়ার জয় কুমার দাস (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সুবিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজিব আলী (আনারস), হবিগঞ্জ পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি ও হবিগঞ্জ জেলা ব্রিকস্ ফিল্ড মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাওছার চৌধুরী (মোটর সাইকেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম লুৎফুর রহমান কাশেম (চশমা) ও রোটারিয়ান মোহাম্মদ সেকুল ইসলাম সর্দার (ঘোড়া)।
চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইছ উল্লাহ (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী রোমান (আনারস), শ্রমিক লীগ নেতা কাউছার আহমেদ (ঘোড়া), শেখ মোঃ আব্দুল মান্নান (মোটর সাইকেল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক নুর উদ্দিন সুমন (চশমা)।
মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ শামছু মিয়া (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ফকির কাউছার (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ মিজানুর রহামন (আনারস), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতা চৌধুরী ফজলে ইমাম সুমন (ঘোড়া), মোস্তাক আহমেদ খান হেলাল (চশমা) ও নেপাল চন্দ্র দাস (সিএনজি অটোরিক্সা)।
প্রত্যেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বিজয়ের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার মধ্য রাতে প্রচার-প্রচারণা শেষ হলেও গতকাল বিভিন্ন স্থানে নিরব প্রচারণার পাশাপাশি এজেন্ট নিয়োগ করেছেন প্রার্থীরা।
এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার, ১০ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসার ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৩টি ইউনিয়নের ২ জন করে ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১ জন করে ৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে ৩টি ইউনিয়নের মোট ভোটার ৪০ হাজার ১১০ জন। এর মধ্যে বানিয়াচঙ্গ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নে ১০ হাজার ৯৪৩ জন। এ ইউনিয়নে কেন্দ্র ১০টি। চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৯৭৮ ভোট। এ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৯টি ও মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নে ১৪ হাজার ১৮৯ জন ভোটার রয়েছেন। এ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র ৯টি।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা (বিপিএম-পিপিএম সেবা) জানান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, স্ট্রাইকিং ফোর্স সার্বক্ষণিক নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে।
উল্লেখ্য, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান ও মাধবপুরের আন্দিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ওই ৩টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে।