
এম এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজার থেকে শতক পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ হওয়ার ১ মাসের মাথায় রাস্তায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। উঠে গেছে অনেক স্থানের কার্পেটিং। বহুল প্রতীক্ষিত এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলেও অসাধু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের যোগসাজসে নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার করার ফলে রাস্তায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এসব অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জানা যায়, উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল খ্যাত দিনারপুর এলাকার লোকজন পাশ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজার যাওয়ার জন্য জনতার বাজার থেকে কাগাবালা সড়কই একমাত্র উপায়। এছাড়াও আথানগীরি, শতক, বড়ইতলা, রামলোহ, দেওপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা সদর, দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিনারপুর কলেজ, পানিউমদা রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজ, দিনারপুর মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হলে গ্রাম থেকে বের হয়ে আসার এটাই একমাত্র রাস্তা। বিগত প্রায় ৫-৬ বছর ধরে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর থেকে এ রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় জনসাধারণ। গত বছরের ২৮ এপ্রিল জনতার বাজার থেকে শতক পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে দুই ঘন্টা বিক্ষোভ করে দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এতে নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তড়িৎ গতিতে আরএআরআইপি প্রজেক্টের অধিনে দেওপাড়া থেকে শতক পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের জন্য ১ কোটি ৯ লাখ ৫শত ২৭ টাকার টেন্ডার করা হয়। পরে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কাজ চলাকালিন সময় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ এবং কার্পেটিং করার কয়েক ঘন্টার মাথায় রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাওয়ার প্রতিবাদ করেন এবং কাজ বন্ধ করে দেন। পরে উক্ত কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী সাঈদুর রহমানকে বিষয়টি অবগত করান স্থানীয় লোকজন। পরে তিনি ভালোভাবে কাজটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করেন। কিন্তু প্রকৌশলীর আশ^াসের ফল পাননি এলাকাবাসী। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নি¤œমানের মালামাল দিয়েই এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক জানান, যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আগামী এক বছরের মধ্যে যদি রাস্তায় কোনো ধরণের ভাঙন বা কার্পেটিং উঠে যায় সেটা মেরামত করে দিবে ঠিকাদার।