নবীগঞ্জের কুশিয়ারা ডাইক ও নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করলেন দুই মন্ত্রী ॥ বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ

এম.এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করলেন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম। বৃহস্পতিবার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক, আউশকান্দি ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যাকবলিত গ্রাম ও ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন শেষে বন্যার্তদের মধ্যে তারা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। দুপুর ১২টায় মন্ত্রীদ্বয় স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদকে সাথে নিয়ে শেরপুর লঞ্চঘাট থেকে নৌকাযোগে কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন ও বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্ট রক্ষায় নদীর তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে মন্ত্রীদ্বয় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের নর্থ প্যাড পরিদর্শন করেন। এসময় নদী ভাঙ্গন থেকে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড রক্ষায় প্রকল্প গ্রহনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দীঘলবাক ইউনিয়নের বিবিয়ানা নর্থপ্যাড নিকটবর্তী মাঠে বন্যা কবলিত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ হাজার জন বন্যার্তের মধ্যে চাল, ডাল, চিনি, তেল, লবনসহ শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়।
হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন স্বপন কুমার বসাক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমান মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুল জাহান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু, নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য প.প কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, ডাঃ ইদ্রিস আলম, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দের মধ্যে আবু সাঈদ এওলা, বজলুর রশিদ, মহিবুর রহমান হারুন, নজরুল ইসলাম, আবু সিদ্দিক, দীঘলবাক আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম হোসেন, সম্পাদক সুজাত চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এস এম লিমন ও জাহাঙ্গীর বখত।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মো. এনামুর রহমান এমপি বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার বন্যার্ত মানুষের পাশে অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আমরা বরাদ্দ করেছি। কোন বন্যার্ত মানুষ বাদ যাবে না। সবাই ত্রাণ পাবে। হবিগঞ্জ তথা সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের এলাকায় পাঠিয়েছেন। কুশিয়ারা ডাইকে যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে এলাকার সকল সচেতন মহলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, কুশিয়ারা নদীর দুই কুল রক্ষায় ৭.৪ কি.মি এলাকা বেরীবাধ নির্মাণের জন্য মাস্টার প্লানের মাধ্যমে ৫শ’ ১৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। আমরা কুশিয়ারা ডাইক পরিদর্শন করেছি। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর ১৭৬ কি.মি ড্রেজিং করা হবে। আগামী বছরে উক্ত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। তখন হবিগঞ্জের মানুষ অকাল বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, কুশিয়ারা ডাইক নির্মাণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নজরদারী রয়েছে।