স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাটে মাত্র ৩ শতক জমির জন্য চাচাকে এলাকা থেকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে ভাড়াটে খুনি দ্বারা নৃশংসভাবে খুন করার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত র‌্যাব সদস্য ছাদেক মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, শানখলা ইউনিয়নের পাট্টাশরীফ গ্রামের দুলা মিয়ার সাথে ৩ শতক জমি নিয়ে তার ভাতিজা একই গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র র‌্যাবে কর্মরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ল্যান্সনায়েক ছাদেক মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ হয়েছে। এমনকি তা মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ায়। মামলায় ছাদেক মিয়া পরাজিত হয়ে চাচার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের বিভিন্ন থানায় দুলা মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করিয়ে তাকে গ্রেফতার করায়। প্রায় দেড় মাস জেল খেটে দুলা মিয়া জামিনে মুক্তি পান। এরপর প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে সাদেক মিয়া তার চাচাকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে ফন্দি আঁটে। সে এক লাখ টাকার বিনিময়ে একটি কিলার গ্রুপের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই কিলার গ্রুপটি একটি সাদা রংয়ের মাইক্রো ভাড়া করে তা নিয়ে চুনারুঘাটে আসে। কিলার গ্রুপ ১৭ জুন দুলা মিয়াকে আইনের লোক পরিচয় দিয়ে একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরে তাকে পানি খাওয়ানোর কথা বলে পানির সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়ে সিকদার মেডিকেলের পেছনে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে নিয়ে গলায় রশি পেছিয়ে হত্যা করে লাশ বস্তার ভিতরে ভরে পানিতে ফেলে দেয়। ১৮ জুন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বস্তায় মোড়ানো একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের পর পুলিশ জুরাইন কবরস্থান থেকে দুলা মিয়ার লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুলা মিয়ার লাশ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভাড়াটে কিলার শামীম সরদার ও জসিম সরদারসহ মোট ৫ আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সাথে তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিমতে গত বুধবার বিকালে উক্ত মামলার প্রধান আসামী ছাদেককে ঢাকাস্থ র‌্যাব হেডকোয়াটার্স থেকে গ্রেফতার করা হয়।
চুনারুঘাট থানার ওসি নাজমুল হাসান জানান, এই মামলার অন্যান্য আসামীদেরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।