স্টাফ রিপোর্টার ॥ আলোচিত বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী আগামী মার্চ পর্যন্ত তার সব মাহফিল কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। তিনি চলে যাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে পিএইচডি গবেষণার কাজ করবেন। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজহারী নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। তরুণ এই বক্তা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ওয়াজ মাহফিল ব্যাপক আকারে প্রচারিত হয়। তাকে নিয়ে সমালোচনাও আছে। এক শ্রেণির বক্তা ও শ্রোতা তার বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দেন এমন অভিযোগ করে তিনিসহ কয়েকজন বক্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন ধর্মমন্ত্রী। তবে এমন কোন ব্যবস্থা নেয়ার আগেই আজহারী তার কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। যদিও চলতি শীত মওসুমে বিভিন্ন স্থানে আজহারীর মাহফিল কর্মসূচি স্থগিত হয় স্থানীয় প্রশাসনের আপত্তির কারণে। এ নিয়ে সমালোচনা করে আসছিলেন তার ভক্তরা। গতকাল কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়ার পরও ভক্তদের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে মিজানুর রহমান নিজের নামের শেষে আজহারী যুক্ত করেন। তিনি এখন মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন।
গতকাল আজহারী তার ফেসবুক পেজে লিখেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ…, প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা। পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে, এখানেই এ বছরের তাফসির প্রোগ্রামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই মার্চ পর্যন্ত আমার বাকি প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হলো। রিসার্চের কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে, আবারও দেখা হবে ও কথা হবে কুরআনের মাহফিলে ইনশাআল্লাহ।
এ বছর বেশির ভাগ প্রোগ্রামেই পারিবারিক ও সামাজিক ক্রাইসিস নিয়ে কথা বলেছি, পাশাপাশি কয়েকটি সুরার তাফসিরও করেছি। আশা করি, আলোচনাগুলো থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। পরিবারের সবাই মিলে আলোচনাগুলো শুনুন এবং কথাগুলো বাস্তব জীবনে মেনে চলার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে, আমাদের পরিবার ও সমাজ সুখময় এবং শান্তিময় হয়ে উঠবে, ইনশাআল্লাহ।
আমি একজন নগণ্য মানুষ। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ছাত্র। কুরআনের ছাত্র হয়েই বেঁচে থাকতে চাই ও নিরলস কাজ করে যেতে চাই। তাই সুপ্রিয় শ্রোতাদের বলব, প্লিজ আমাকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না। আমাকে জড়িয়ে কোনো ব্যাপারে কাউকে গালাগালি করবেন না, অন্য কোন মতাদর্শের আলেমদের হেয় বা ছোট করে কিছু বলতে যাবেন না। যদিও তাদের কেউ কখনো আমাকে ছোট করে কথা বলে। অনুরূপভাবে কোথাও আমাকে ডিফেন্ড করে তর্ক বা কমেন্ট করতে চাইলে, ভদ্রতা বজায় রেখে, যৌক্তিকভাবে এবং বিনয়ের সাথে সেটা করুন। সত্য একদিন উন্মোচিত হবেই হবে, ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে, দেশের আপামর জনতার যে ভালোবাসা পেয়েছি, জানি না সিজদায় পড়ে কতটুকু অশ্রু ঝড়ালে এবং কোন ভাষায় শোকরগোজার হলে এর যথাযথ শুকরিয়া আদায় হবে। মালিকের দরবারে আলীশানে লাখো কোটি শুকর এবং সুজুদ। ওয়ালহামদু লিল্লাহি ‘আলান্নি’ আম।
প্রোগ্রামগুলো বাস্তবায়নে যারা সার্বিক সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবার জন্য রইল আন্তরিক ভালোবাসা ও দোয়া। বিশেষ করে পুলিশ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রোগ্রামগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাদের আল্লাহ তায়ালা উত্তম প্রতিদান দান করুক।
আমার এ জীবনের ছোট্ট অভিজ্ঞতায় যা দেখলাম, সেটা হলো- আমরা আমাদের জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়ে দেই অন্যকে হিংসা করতে করতে। নিজেরা কাজ না করে অন্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে আমরা মহা ব্যস্ত। আসলে, অপপ্রচার করে তেমন কোনো লাভ নেই। অপপ্রচারে আমি কখনো মনক্ষুণ্ন হই না। আমার বিশ্বাস আপনারাও হবেন না। কারণ অপপ্রচারগুলোই আমাদের প্রচারণার দায়িত্ব পালন করেছে আলহামদুলিল্লাহ। হক্বের পথে বাধা, বিপত্তি আসবেই। এটাই স্বাভাবিক। যে পথে কাঁটা নেই সেটা পথ নয়, সেটা কার্পেট। কার্পেটে হেঁটে মজলিশে পৌঁছানো যায়, মনজিলে নয়।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com