মোহাম্মদ শাহ্ আলম ॥ হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালকে দালালমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক ব্যানার লাগিয়েছে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এতে লেখা হয়েছে- ‘হাসপাতালে দালালমুক্ত পরিবেশে চিকিৎসা নিন, দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হবেন না। দালাল সম্পর্কে তথ্য দিন পুলিশের সহযোগিতা নিন।’
অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা যে পিছু ছাড়ছে না হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাালের। এমপি-মন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কড়াকড়ি নির্দেশও যেন গায়েই লাগছে না হবিগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি এবার অভিযোগ উঠেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে চিকিৎসা প্রদানের। যদিও এই কর্মকা- অনেক পুরনো বলে দাবি করেছেন অনেক রোগী। আবার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ।
শুক্রবার সরেজমিনে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে গেলে অনেক রোগী এসব অভিযোগ করেন। ইমার্জেন্সি বিভাগে রোগীদের সেলাই, ব্যান্ডেজ থেকে সব ধরণের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন পরিচ্ছন্নকর্মী কিশোর লাল ও আবুল হোসেন। এমনকি গার্ডের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ও অফিস সহকারীরাও বিভিন্ন সময় প্রাথমিক চিকিৎসা করে থাকেন। আবার একই সূই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেলাই করার অভিযোগও রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও। অবশ্য এসব অভিযোগের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তাদের দাবি- হাসপাতালে স্টাফ সংকট ও পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বরাদ্দ না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ রোগীরা না জেনেই গার্ড ও ঝাড়–দারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন রোগীরা।
এ ব্যাপারে চিকিৎসা নিতে আসা বানিয়াচং উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের রাজন দাস বলেন, ‘আমরাতো আর চিনি না কে ডাক্তার আর কে ঝাড়–দার। যার কারণে আমরা তাদের দ্বারাই চিকিৎসা নিচ্ছি।’
সদর উপজেলার পইল গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘হাসপাতালের দায়িত্বশীলদের কোন পরিচয়পত্র না থাকার কারণে কে পরিচ্ছন্ন কর্মী আর কে চিকিৎসক তা বুঝতে পারি না। আবার অনেক সময় বুঝতে পারলে আমরা প্রতিবাদ করি। কিন্তু এতে কোন কর্ণপাত করেন না কর্তৃপক্ষ।’ তিনি বলেন, একই সূই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেলাই দেয়া হয়। যা খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। অথচ এভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন সাধারণ রোগীরা হবিগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।’
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতীন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন, ‘ইমার্জেন্সি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও ব্রাদাররা আছেন। সুতরাং ঝাড়–দার দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কথা না।’ এছাড়া একই সূই দিয়ে সেলাই করলে কোন সমস্যা হয় না বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘একজন রোগীকে সেলাই দেয়ার পর যদি সেটি ভালোভাবে পরিস্কার করা হয় তাহলে কোন সমস্যা হয় না।’