যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে হবিগঞ্জে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গত রবিবার হবিগঞ্জ শহরে দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার সুন্নী জনতার অংশগ্রহণে বিশাল জশনে জুলুছ বের করা হয়। হবিগঞ্জ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে ও মসজিদ সমন্বয় সুন্নী সংগ্রাম পরিষদের ব্যবস্থাপনায় জেলা সদরে জশনে জুলুছ বের করা হয়। হবিগঞ্জ শহরে সর্ববৃহৎ জশনে জুলছে জেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও বিভিন্ন দরবার শরীফের পক্ষ থেকে স্ব-স্ব ব্যানারে খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে প্রতিকুল আবহাওয়া উপেক্ষা করে চৌধুরী বাজার কেন্দ্রীয় সুন্নী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জমায়েত হয়। সকাল ১০টায় সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ রইছ মিয়ার নেতৃত্বে হাজার হাজার জনতাকে সাথে নিয়ে মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন নিমতলায় সমাবেশে মিলিত হয়। আলহাজ্ব মোঃ রইছ মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা এম.এ জলিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন- কাজী মাওলানা নাজমুল হোসেন ও নাতে রাসুল (সাঃ) পরিবেশন করেন হাফেজ মাওলানা তাজ উদ্দিন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান মিজান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম। উপস্থিত উলামায়ে কেরামের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা গোলাম মোস্তফা নবীনগরী, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আহমদ, অধ্যক্ষ মাওলানা আফছর আহমদ তালুকদার, অধ্যক্ষ মুফতি মোঃ ফারুক মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান আউয়াল, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ আকবর হোসেন জিতু প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও হাজার হাজার নবীপ্রেমির উপস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক। আগামীতে আরো ব্যাপক সমারোহে পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সাঃ) এর জশনে জুলছে যোগদান করতে হবে।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের এই প্রতিকুল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মুসলিম জনতা পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সাঃ) এর জশনে জুলছে অংশগ্রহণই প্রমাণ করে হবিগঞ্জ সুন্নীয়তের নগরী। ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে যে ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল আল্লাহর হাবিবের আগমন দিবসের উছিলায় সেই ক্ষতি শতগুণ কম হয়েছে। শহীদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকারীদের এবং যারা আল্লাহর হাবিব (সাঃ) ও ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আবেদন জানানো হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব মোঃ রইছ মিয়া বলেন- প্রতিটি গ্রামে মাদ্রাসা নির্মাণ করে আলেম তৈরি করতে হবে। মসজিদে কর্মরত ইমাম মোয়াজ্জিনদের সম্মানীভাতা বৃদ্ধির জন্য মসজিদ কমিটির প্রতি তিনি আহবান জানান। শেষে মুসলিম উম্মার সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে মিলাদ পরিচালনা করেন মুফতী মাওলানা আলমগীর হোসেন সাইফী ও মাওলানা মোঃ আবু তৈয়ব মুজাহিদী। মোনাজাত করেন চৌধুরী বাজার কেন্দ্রীয় সুন্নী জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মুফতি আব্দুল মজিদ পিরিজপুরী। প্রেস বিজ্ঞপ্তি