রায়হান ইউ সুমন, বানিয়াচং থেকে ॥ সোনার বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করতে মাদক এখন ভয়ঙ্কর অভিশাপ হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে লাখো শহীদের রক্তবিধৌত এই বাংলার জমিনে। মাদকাসক্তের সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের মধ্যে সপ্তম। সম্প্রতি বানিয়াচংয়ে মাদকের ছড়াছড়ি বেড়ে গেছে। হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদক। মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের যেন মাদক নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ নেই। যে কারণে মাদকের ব্যাপকতা প্রসার লাভ করেছে। যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, হুইস্কি, বিয়ার, অফিসার্স চয়েজসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য।
উপজেলার একাধিক স্পটে রয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সন্ধ্যার পর চিহ্নিত কিছু স্পটে বসে মাদকের ভাসমান হাট। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতেও নারাজ। এই মাদকের বিষয় নিয়ে প্রায়ই উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় মাদক বিক্রির যেসব সুনির্দিষ্ট পয়েন্টে মাদক কেনাবেচা হয় তা নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ হার দিন দিন বেড়ে চলেছে। মাদক সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীরা সুকৌশলে তাদের লোকজনের মাধ্যমে এসব মাদক আমদানি-রফতানি করে থাকে। মাদক ব্যবসা অধিক লাভজনক হওয়ায় এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সের তরুণরা। মাঝে মধ্যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত খুচরা বিক্রেতারদের আটক করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে গডফাদাররা। বখাটে যুবকদের পর এখন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে সমাজের নামিদামি সম্ভ্রান্ত পরিবারের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সমাজে সুনাম রয়েছে এমন পরিবারের যুবকরাও অতিরিক্ত মাদকে আসক্তি হওয়ার কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সহপাঠী ও বন্ধুবান্ধবের কান কথায় প্রথমে ত্বকের সৌন্দর্য ও গ্ল্যামার বাড়ানোর জন্য কৌতুহল মেটাতে প্রথমদিকে তরুণ প্রজন্ম ইয়াবা সেবন করলেও একসময় তা নেশায় রূপ নেয়। একই সাথে বাড়ে যৌনতার প্রতি আসক্তিও। মাদকের খরচ যোগাতে টাকার জন্য এসব মাদকসেবীরা পা বাড়াচ্ছে অপরাধ জগতের সাথে।
এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার সামন্ত জানান, সরকার মাদক নির্মুলে যে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং সমাজকে মাদকমুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। মাদকের সঙ্গে জড়িত যত প্রভাবশালীই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এর মূলোৎপাটন করা হবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com