হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেছেন, আমি বদলী হয়ে চলে গেলেও হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদীর উচ্ছেদ থামবে না। পরবর্তী জেলা প্রশাসক এসেও উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখবেন। ইতোমধ্যে নদীর প্রায় অর্ধেক অংশের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকি অংশের দখলদারদের শীঘ্রই উচ্ছেদ করে খোয়াই নদী পুনরুদ্ধার করা হবে। রবিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের উদ্যোগে তাঁকে দেয়া বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জ শহরকে নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রথমে ১৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে খোয়াই রিভার স্টিস্টেম প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী সেটি বাড়িয়ে ২ হাজার কোটি টাকা করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে। বর্তমানে প্রকল্পের ফাইল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইকরণের জন্য প্রক্রিয়াধীন। সেখানে দেখার পর একনেক অনুমোদন করবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে হবিগঞ্জ শহর নান্দনিক শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এ প্রকল্পের ৫ কিলোমিটার এলাকায় ৫টি ব্রিজ, বিনোদনের স্থান ও হোটেল নির্মিত করা হবে। প্রকল্পের আওতায় পুরাতন খোয়াই নদী সংষ্কার হলে শহরে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জ শহর নান্দনিক শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি আশা করি- পরবর্তী জেলা প্রশাসক জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবেন। জেলা প্রশাসক বলেন, পুরাতন খোয়াই নদীর উচ্ছেদ অভিযান শুরুর দিক থেকে এখন পর্যন্ত সাংবাদিকরা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে এসেছেন। আমি যাওয়ার পরে তা অব্যাহত রাখবেন। সাংবাদিকদের সহযোগিতা থাকলে উচ্ছেদ অভিযানে কেউ বাঁধা সৃষ্টি করতে পারবে না। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, মাধবপুরের সোনাই নদীর তীর থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করেছি। শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমাধান করতে গিয়ে চরম বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বর্জ্য ফেলার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। যা-ই করেছি হবিগঞ্জবাসী কল্যাণে করেছি। যেখানেই যাই না কেন, হবিগঞ্জবাসীর কথা আজীবন মনে থাকবে।
হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রাসেল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম সুরুজ আলীর পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মোঃ নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটিসি) মোহাম্মদ শামছুজ্জামান, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি হারুনুর রশিদ চৌধুরী, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, সাবেক সভাপতি শামীম আহছান, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাবান মিয়া, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নাহিজ, সাবেক সভাপতি শোয়েব চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন, সাবেক সহ-সভাপতি ইসমাঈল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি এমদাদুল হক সোহেল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শাকিল চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দৈনিক ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মাছরাঙা টিভি’র চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদ, সময় টিভি’র রাশেদ আহমদ খান, সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি এমএ ওয়াহিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম কহিনুর, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছানু মিয়া, সাংবাদিক ফোরামের সহ-সভাপতি মামুন চৌধুরী, নারীনেত্রী সৈয়দা শরীফা আক্তার কুমকুম, মায়ের মমতা অবৈতনিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন আক্তার সোনিয়া প্রমূখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসক যে অভিযান পরিচালনা করেছেন হবিগঞ্জবাসী তা আজীবন স্মরণ রাখবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসকের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রউফ সেলিম। গীতা পাঠ করেন যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি প্রদীপ দাশ সাগর।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সদস্য মোশাহিদ মিয়া, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ইলিয়াছ আলী মাসুক, কাজল সরকার। অন্যান্য সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নূরুল হক কবির, দিদার এলাহী সাজু, সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম মিজান, জাকারিয়া চৌধুরী, এসকে সাগর, জুয়েল চৌধুরী, আখলাছ আহমেদ প্রিয়, কাউছার আহমেদ, মশিউর রহমান, নায়েব হোসাইন, এম সজলু, কাজী মিজান, নজরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম জীবন, একে কাউছার, সাইফুল ইসলাম তারেক, এমএ আজিজ সেলিম, শাহ জালাল উদ্দিন জুয়েল, নিরঞ্জন গোস্বামী শুভ, এইচ এম হেলিম, টিপু মিয়া প্রমূখ।