মাছ ধরার কথা বলে হাওরে নিয়ে বলাৎকারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শিশু রায়হানকে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে দেয় ঘাতক

এসএম সুরুজ আলী ॥ লাখাইয়ে রুবেল মিয়া (৯) নামে এক শিশুকে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে হত্যার দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দন্ডিত যুবক লাখাই উপজেলা ধর্মপুর গ্রামের আব্দুল হাই’র পালিত পুত্র রায়হান মিয়া ওরফে জাবেদ রায়হান (৩১)। বুধবার উল্লেখিত রায় দেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম নাসিম রেজার আদালত। আদালতের পরিদর্শক মোঃ আল-আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়হান মিয়া রমনা থানার শিকদার বাড়ি এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, রায়হান লাখাই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের আব্দুল হাইকে বাবা ডেকে সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন। ২০০৩ সালের ৮ আগস্ট একই গ্রামের শরীফ মিয়ার ছেলে স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের ৪র্থ শ্র্রেণির ছাত্ররুবেলকে মাছ ধরার কথা বলে নৌকায় করে পার্শ্ববর্তী হাওরে নিয়ে বলাৎকারের চেষ্টা চালায় সে। এ সময় শিশু রুবেল চিৎকার শুরু করলে রায়হান ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে দেয়। ঘটনার ৩ দিন পর হাওরে ভাসমান অবস্থায় তার মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। ১১ আগস্ট মরদেহ উদ্ধারের পর রুবেলের বাবা বাদি হয়ে রায়হানকে একমাত্র আসামি করে লাখাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে লাখাই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার কল্যাণপুর থেকে রায়হানকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। সে ১৬ আগস্ট হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
পরবর্তীতে ২০০৫ সালের ৫ অক্টোবর লাখাই থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান মিয়া তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ১৬ বছর পর ১১ জন সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ ফারুক জানান, রায় ঘোষণার পর রুবেলের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে।