মোহাম্মদ শাহ্ আলম ॥ হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের বিছানায় এখন কুকুর-বিড়াল ও ছাগল বসবাস শুরু করেছে। রোগীদের পাশাপশি এখন বিছানায় ঘুমায় এসব প্রাণী। আবার বিভিন্ন সময় খাবারের সন্ধানে বিড়াল নবজাতকসহ রোগীদের উপর আক্রমণ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতালে আসা রোগীদের অভিযোগ- প্রতিদিন বেশ কয়েকটি কুকুর-বিড়াল ও ছাগল বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ায়। রোগীদের বিছানায় রাতে একসাথে ঘুমায় বিড়াল। অনেক সময় এসব বিড়াল খাবারের লোভে রোগীদের উপর আক্রমণও করে। খাবারে মুখ দিয়ে নষ্ট করে দেয়। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি ছাগল ছানাও এসব কুকুর-বিড়ালের সাথে প্রতিনিয়ত বিচরণ করে হাসপাতালের ভেতরে। এ সময় হাসপাতালের ভেতরেই প্র¯্রাব-পায়খানা করে থাকে প্রাণীগুলো। অনেক সময় রোগীদের বিচানায়ও প্র¯্রাব-পায়খানা করে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
সরেজমিনে দেখা যায়- ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনের ভেতরেই এসব কুকুর-বিড়াল ও ছাগলের বেশি উৎপাত রয়েছে। সেখানে এসব প্রাণী নিশ্চিন্তে বিচরণ করছে। বেশ কয়েকটি বিড়ালছানা ওষুধ রাখার আলমারিতে ঘুমিয়ে আছে। শুধু নতুন ভবনেই নয়, পুরাতন ভবনের শিশু ও গাইনী ওয়ার্ডের ভেতরেও রয়েছে এসব বিড়ালের অবাদ বিচরণ। ওই ওয়ার্ডের রোগীদের অভিযোগ- বিড়ালের আতংকে নবজাতক রেখে রোগীর স্বজনরা ঘুমাতে পারেন না। বিভিন্ন সময় নবজাতকের পাশে রাতে বিড়াল ঘুমিয়ে পড়ে। আর এসব বিড়ালের উপর রাতের অন্ধকারে হাত-পা লাগলে আক্রমণ করে। বিড়াল ও কুকুরের মুখের লালা থেকে প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে বলে সন্দেহ করছেন হাসপাতালে আগত রোগী ও তার স্বজনরা। তাদের আশঙ্কা এসব কুকুর-বিড়ালের কারণে জলাতঙ্কসহ নানা রোগ হতে পারে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের আয়েশা আক্তার জানান- হাসপাতালের ভেতরে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমানো যায় না। বিড়ালগুলো রাতে বিছানার উপরে উঠে যায়। বিড়ালের উপর হাত-পা লাগলে এগুলো আছড়া মারে (আক্রমণ করে)।
লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের নীল বানু বলেন- আমার ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু হাসপাতালের ভেতরে খাবার খাওয়া যায় না। বিড়াল আর ছাগল এসে খাবারে ভাগবসায়।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক নূরুজ্জামান জাকি বলেন- আমার খালাতো ভাইকে নিয়ে সদর হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতরে কুকুর-বিড়াল-ছাগল ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন- সদর হাসপাতালের ভেতরে কুকুর বিড়ালে ঘুরাঘুরি করলে এদের তাড়িয়ে দেওয়ার মতো কেউ সেখানে নেই। এ সব প্রাণী প্রতিনিয়ত হাসপাতালের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া ছড়ালেও কর্তৃপক্ষ উদাসিন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন- এসব আমি জানি না, কাল হাসপাতালে এসে দেখি কি অবস্থা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রথীন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন- হাসপাতালে বিড়াল থাকতে পারে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু কুকুর ও ছাগল থাকার কথা না। কি করে এসব প্রাণী হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করছে তা আমি দেখব। স্টাফ থাকার পরেও কেন এমন হবে তা যাচাই করা হবে।