এম এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ ॥ নবীগঞ্জে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৫টি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিনেও এগুলো মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় যে কোন সময় এগুলো ধ্বসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতুগুলোর রেলিংসহ উপরের কাঠামো ইতোমধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। ওই অবস্থায় সেতুগুলো জোড়াতালি দিয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। ওই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ৫টি পুননির্মাণে সড়ক ও জনপথ বিভাগ হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে ডিপিপি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তা অনুমোদন হয়নি। ওই সেতুগুলোর মধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ-শেরপুর সড়কের ইনাতগঞ্জ বাজারের কাছের সেতু এবং নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কের বালিখাল বাজারের বেইলি সেতুু দুটি যথাক্রমে শুটকি নদী ও বিবিয়ানা নদীর উপর নির্মিত। দু’টি সেতুরই দৈর্ঘ্য ৭০.২৭ মিটার। এছাড়া মীরপুর-আউশকান্দি সড়কের নবীগঞ্জের বেতাপুর সেতু, আমুকোনা-রুস্তমপুর সেতু এবং উলুকান্দি এতিমখানা সংলগ্ন সেতু পূর্ব-পাকিস্থান আমলে তৎকালীন জেলা বোর্ডের অধীনে নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কের বালিখাল বাজারের বেইলি সেতুটি একাধিক বার প্লেইট ভেঙ্গে নীচ দিয়ে দেবে যায়। বরাক নদীর উপর নির্মিত সেতুর গার্ডারে ফাঁটল ধরেছে। তাছাড়া ওই সেতুগুলোর উপরের ডেস্কটপ স্ল্যাব ও রেলিংয়ের একাংশ ধ্বসে পড়েছে। সেখানে স্টিলের প্লেট স্থাপন করে যোগাযোগ ব্যবস্থা কোনরকমে চালু রাখা হয়েছে। নড়বড়ে ওই সেতুর উপর দিয়ে যখন বাস ট্রাক যাতায়াত করে তখন সেতুগুলো কাপতে থাকে। এ দিকে মীরপুর-আউশকান্দি সড়কের নবীগঞ্জের বেতাপুর সেতু, আমুকোনা-রুস্তমপুর সেতু এবং উলুকান্দি এতিমখানা সংলগ্ন সেতু ২০০৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে তা মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হয়। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যোগাযোগে ব্যবস্থা কোনরকমে টিকিয়ে রাখা হয়েছে ওই সেতুগুলোর উপর দিয়ে। নবীগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়কের বালিখাল বাজারের বেইলি সেতুটি প্রায় ৬০ মিটার দীর্ঘ গুরুত্বপূর্ণ শুটকি নদীর উপর নির্মিত। সেতুটি নির্মাণকালে আরসিসি পাটাতনের প্রস্তাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কংক্রিট পিলারের উপর বেইলি স্থাপন করা হয়। এটি এখন নড়বড়ে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে ওয়ান লেনের এই সেতুটির স্টিলের পাটাতনসহ অন্যান্য স্ট্রাকচার খুলে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে যানবাহন এমনকি লোক চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। গত ২ বছরে অন্তত ৩০ বার এ ধরনের বিপত্তির ঘটনা ঘটেছে। জোড়াতালি দিয়ে চালু রাখা এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর উপর দিয়ে কোন রকমে যানবাহন চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, শুটকি নদীর বেইলি সেতুর পাটাতন খুলে গেলে তা মেরামত করা হয়। অন্যান্য সেতুর মেরামত কাজ চলছে। নতুন ভাবে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠানো হলেও অনুমোদন পাওয়া যায়নি।