রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আজ অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করবেন পৌর কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ মঙ্গলবার রাতে গোটা হবিগঞ্জ পৌর এলাকা অন্ধকারে থাকবে। শহরে কোন সড়ক বাতি জ¦লবে না। শুধু তাই নয়, শহরের কোন বাসাবাড়ি থেকে পৌরসভার স্টাফরা ময়লা আবর্জনা নিবে না। কনজারভেন্সীর আওতাধীন শহর পরিচ্ছন্নতার কাজ বন্ধ থাকবে। হবিগঞ্জ পৌরসভায় গিয়ে কোন নাগরিক সেবা পাবেন না পৌরবাসী। এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ কর্মবিরতি পালন করবেন হবিগঞ্জ পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ। কর্মবিরতি চলাকালে পৌরসভা ছেড়ে কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানসহ পেনশন প্রথা চালুর দাবি ও জনপ্রতিনিধিদের সম্মানীভাতা প্রদানের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে হবিগঞ্জের সকল পৌরসভায় আন্দোলনের এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচির গতকাল সোমবার ছিল প্রথম দিন। প্রথম দিনে হবিগঞ্জ পৌরসভাসহ জেলার সকল পৌরসভায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস এসোসিয়েশন। সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ পৌরসভাসহ সারাদেশের পৌরসভায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে হবিগঞ্জ পৌরসভায় কর্মবিরতিও পালন করেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। পৌরকর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন হবিগঞ্জ পৌরপরিষদের সদস্যবৃন্দ। বাংলাদেশ সার্ভিস এসোসিয়েশন হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ ফয়েজ আহমেদ বলেন- পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সকল নাগরিকের জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত নাগরিক সেবা দেয়ার কাজে নিয়েজিত থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার হতে না হওয়ার কারণে তাদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। চাকুরী শেষে তাদের পেনশন না থাকার কারণে তাদেরকে পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় দিনাতিপাত করতে হয়। তাই সারাদেশের পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে শতভাগ বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আজ ঐক্যবদ্ধ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘরে ফিরে যাবে না। তিনি আগামী ১৪ জুলাই ঢাকায় আয়োজিত মহাসমাবেশ সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। হবিগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র দীলিপ দাস পৌরকর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে এ আন্দোলনের সফলতা কামনা করেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌরকাউন্সিলর মোঃ জাহির উদ্দিন, মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, গৌতম কুমার রায়, শেখ নূর হোসেন, মোঃ আলমগীর, শেখ মোঃ উম্মেদ আলী শামীম, খালেদা জুয়েল ও অর্পনা পাল, বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস এসোসিয়েশ হবিগঞ্জ পৌরসভা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান দুলনসহ হবিগঞ্জ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
বাংলাদেশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আব্দুল আলীম মোল্লা স্বাক্ষরিত এক পত্রে দাবি আদায়ের স্বপক্ষে ৩ দিনের কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে। ১ জুলাই সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি। ২ জুলাই মঙ্গলবার জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান করে এক দফা দাবি আদায়ের পক্ষে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন। ওইদিন সকাল ৬টা হতে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত সড়ক বাতি ও কনজারভেন্সী সেবাসহ অন্যান্য সকল দাপ্তরিক সেবা বন্ধ থাকবে। ১৪ জুলাই ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে/কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের সকল পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মহাসমাবেশসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।