ভাই বিদেশে থাকার সুযোগে প্রায়ই ভাবীকে উত্ত্যক্ত করতো কলেজছাত্র দেবর সাইফুর। এর জের ধরে সাইফুরের মাকে মারপিট করে হোসনা। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে মাকে মারপিটের দৃশ্য দেখে ঘর থেকে ছুরি এনে হোসনাকে কুপিয়ে হত্যা করে সাইফুর। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে

আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম বড়াইল গ্রামে হোসনা খাতুন নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে কলেজছাত্র সাইফুর রহমান। সোমবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। নিহত হোসনা খাতুন ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী রিপন মিয়ার স্ত্রী। এসময় স্থানীয় জনতা ঘাতক হিসেবে কলেজছাত্র সাইফুর রহমানকে (২১) আটক করে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। সাইফুর পশ্চিম বড়াইল গ্রামের সুরত আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হোসনা খাতুনের স্বামী রিপন মিয়া কুয়েত প্রবাসী। প্রতিবেশী সাইফুর তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে হোসনা খাতুন ও সাইফুরের মায়ের মাঝে ঝগড়া হয়। এ সময় হোসনা খাতুন সাইফুরের মাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সাইফুর তা দেখে উত্তেজিত হয়। এক পর্যায়ে সে ঘর থেকে ছুরি এনে হোসনাকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান হোসনা। এর পরপরই স্থানীয় জনতা সাইফুরকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার এসআই অলক বড়–য়া একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং সাইফুরকে তাদের জিম্মায় নিয়ে আসেন। পরে তিনি নিহতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
আটক সাইফুর রহমান জানায়, অভাব অনটনের সংসারে তার মায়ের সাথে প্রায়ই ঝগড়া করতো ভাবী হোসনা আক্তার। সাইফুরের মাকে মারধোরও করতো হোসনা। ঘটনার দিন সে কলেজ থেকে এসে দেখতে পায় তার মাকে মারছে হোসনা আক্তার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইফুর তার ভাবীকে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। সাইফুর জানায়, এ ঘটনা আমি নিজেই ঘটিয়েছি। আর কেউ না।
এ ব্যাপারে এসআই অলক বড়–য়া জানান, গ্রেফতারকৃত সাইফুর রহমান প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে কি কারণে হত্যা করেছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান জানান, হত্যাকারী যুবক সাইফুর কলেজ ছাত্র। সোমবার বিকেলে সে কলেজ থেকে এসে হোসনা খাতুন তার মাকে লাঠি দিয়ে মারধোর করছে দেখতে পায়। এটি দেখে সে সহ্য করতে না পেরে ঘর থেকে ছুরি এনে হোসনার পেটে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে মারধোর করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। তিনি আরও জানান, নিহত হোসনার স্বামী বিদেশে থাকে। কলেজছাত্র সাইফুর নাকি হোসনাকে প্রায়ই ডিস্টার্ব করত। এ খুনের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।