দীর্ঘ ২২ বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উজ্জীবিত

সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে মহিলা লীগকে শক্তিশালী করার প্রত্যয়

এসএম সুরুজ আলী ॥ আজ শনিবার বাংলাদেশ মহিলা লীগ হবিগঞ্জ জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে উদ্বোধন করা হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি গাজী মোঃ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সাফিয়া খাতুন। প্রধান বক্তা মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবেক এমপি নাসিমা ফেরদৌসি, সহ-সভাপতি আলেয়া পারভীন রঞ্জু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, শিখা চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক এসকে আনার কলি পুতুল, সুরাইয়া বেগম ইভা, আইন বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া বেগম, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক হুসনে আরা রানী, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক দিলারা মোস্তফা, কেন্দ্রীয় সদস্য কনা জব্বার, কুহিনুর বেগম, মিনারা বেগম, রোকেয়া জামাল, শাহিনা আক্তার সাথীসহ মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন জেলা মহিলা লীগের সভাপতি জমিলা বেগম। সভা পরিচালনা করবেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমত আরা বেগম জলি। এদিকে সম্মেলনে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র্রীয় নেতৃবৃন্দ হবিগঞ্জে এসে পৌঁছেছেন। দীর্ঘ ২২ বছর পর জেলা মহিলা লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। সম্মেলন সফল করতে তারা বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছেন। নতুন অনেক মহিলাকে দলের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কয়েক দিন ধরেই সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন জেলা মহিলা লীগ নেতৃবৃন্দ। প্রতিদিনই মহিলা লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ ও বাসা-বাড়িতে গিয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থন চাইছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা। পাশাপাশি তারা নিজের পক্ষে কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সমর্থন পেতেও লবিং করছেন। সম্মেলন সফল করতে মহিলা লীগ নেতৃবৃন্দ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট আবু জাহিরসহ জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে প্রস্তুতি সভা করেছেন। প্রস্তুতি সভায় এমপি আবু জাহির সম্মেলন সফল করতে মহিলা লীগ নেতৃবৃন্দকে সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছেন। এছাড়া সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে মাধবপুর থেকে সম্মেলনস্থল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি তোড়ণ নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলোতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয়, এমপি অ্যাডভোকেট আবু জাহিরসহ মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ছবি স্থান পেয়েছে।
জেলা মহিলা লীগ সভাপতি জমিলা বেগম জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ৯৭ সালে প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ ও প্রাক্তন পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের উপিস্থিতিতে জেলা মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সম্মেলনে আমাকে সভাপতি ও মিনা জালালকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছিল। মিনা জালাল আমাদের মধ্যে বেঁচে নেই। তিনি দলের জন্য অনেক কাজ করেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখনকার সময় মহিলা লীগ তেমন শক্তিশালী ছিল না। মূলত আমি আর মিনা জালালই সংগঠনের কাজ করতাম। আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে জননেত্রী শেখ হাসিনা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির ও মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতায় আজ মহিলা লীগকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে দাঁড় করিয়েছি। সংগঠনের সকল ইউনিটের কমিটি গঠন করতে সক্ষম হয়েছি। এবারের সম্মেলন সফল ও স্বার্থক হবে বলে আমি আশাবাদী।
মহিলা লীগ সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি জমিলা বেগমের সাথে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তারা হলেন- জেলা মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমত আরা বেগম জলি, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা মহিলা লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট পারভীন আক্তার ও বানিয়াচং উপজেলা মহিলা লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহানারা আক্তার বিউটি ও ১ম সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা পরিষদ সদস্য ফাতেমা-তুজ-জোহরা রীনা, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা পরিষদ সদস্য রওশন আরা ভূইয়া লাকীর নাম শুনা যাচ্ছে। মহিলা লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে তারা মহিলা লীগকে আরো শক্তিশালী করতে চান।