এসএম সুরুজ আলী ॥ বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো দর্শকদের উপস্থিতিতে বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সাফরার হাওরে কালারডোবা থেকে নৌকাবাইচ শুরু হয়ে আতুকুড়া তলিয়ে এসে শেষ হয়। প্রতিযোগিতায় ৯টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি নৌকার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। বাইচে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয় বানিয়াচং উপজেলার বাঘহাতা গ্রামের নৌকা ও রুইয়াল গ্রামের নৌকা। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ার কারণে আয়োজক কমিটি লটারীর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে লটারীতে রুইয়াল গ্রামের নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়। ২য় স্থান অর্জন করে বাঘহাতা গ্রামের নৌকা এবং ৩য় স্থান অর্জন করে আতুকুড়া গ্রামের আব্দুল হেকিমের নৌকা।
প্রতিযোগিতা শেষে আয়োজক কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য জালাল মিয়া আখনজীর সভাপতিত্বে এবং আবু বক্কর খানের পরিচালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শৈলেন চাকমা, বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ মোবারক, সুবিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান জয় কুমার দাস, আতুকুড়া-সুবিদপুর শিক্ষা কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাসুদ করিম আখনজী, জেলা পরিষদ সদস্য আশিক মিয়া, জেলা পরিষদের মহিলা সদস্য রওশন আরা ভুইয়া লাকী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শরীফ উল্লাহ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সজিব আলী, এমপি আব্দুল মজিদ খানের ছেলে বাধন খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস। অন্যান্যদের মাঝে বক্তৃতা করেন প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল হেকিম, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সামছুল হক আখনজী, নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক এসএম সুরুজ আলী, মহিবুল হোসেন উজ্জল, তাহিরুল হক আখনজী, ইকবাল আহমেদ, মহিবুর রহমান খান, শাহাব উদ্দিন, শিপন মিয়া প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে এমপি মজিদ খান বলেন, নৌকাবাইচ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতা। আদিকাল থেকেই এ প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। কালের পরিবর্তনে এ প্রতিযোগিতা অনেকটা বিলুপ্ত হওয়ার পথে থাকলেও আতুকুড়া গ্রামবাসী প্রতি বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছেন। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য তিনি সহযোগিতা করে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। পরে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ চ্যাম্পিয়ন নৌকার মালিকের হাতে ১ম পুরস্কার হিসেবে ১টি ফ্রিজ, রানার্সআপ নৌকাকে ১টি ২১ ইঞ্চি রঙ্গিন টিভি ও ৩য় স্থান অধিকারী নৌকার মালিকের হাতে ১টি ১৪ ইঞ্চি রঙিন টিভি তুলে দেন। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় আতুকুড়ার যুবকরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।