স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ মরহুম আলহাজ্ব আজিজুর রহমানের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। মরহুম আজিজুর রহমান ১৯৩৫ সালে নবীগঞ্জ উপজেলার বদরদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনে উন্নতি করার প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি ছিল তাঁর। কঠোর পরিশ্রম, সততা ও নিষ্ঠার সাথে তিনি ব্যবসা জগতে প্রতিষ্ঠিত হন। একে একে প্রতিষ্ঠা করেন বিউটি ফুট ওয়্যার, শামীম ইলেক্ট্রনিক্স ও আজিজ এন্ড কোম্পানী। ১৯৮৫ সনে তিনি বৃহত্তর সিলেট ও কুমিল্লার মধ্যে প্রথম হবিগঞ্জ অটোমেটিক রাইস মিল প্রতিষ্ঠা করে শিল্পায়নে পদক্ষেপ রাখেন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন। হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ও হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচুর ছাত্রছাত্রীকে সাহায্য করেছেন। ব্যবসায়ীসহ যে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সমস্যায় তিনি এগিয়ে গেছেন নিঃস্বার্থভাবে। মার্চেন্ট এসোসিয়েশনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছেন দীর্ঘদিন। ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) প্রতিষ্ঠা করে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। স্কাউটস্ আন্দোলনের অন্যতম সফল প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ মুক্ত স্কাউটস্-এর সভাপতি ছিলেন আমৃত্যু। ১৯৮৮ সালে হবিগঞ্জে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগের স্কাউটসের আঞ্চলিক মহাসমাবেশের একজন সফল সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মরহুম আলহাজ্ব আজিজুর রহমান হবিগঞ্জ আহ্ছানিয়া মিশনের অন্যতম খাদেম ছিলেন। মিশনের সম্পাদক হিসেবে তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সাথে। তিনি অত্যন্ত সহজ ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন।
মরহুম আজিজুর রহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত জাগদলে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পূর্ব থেকেই তিনি মাওলানা ভাসানীর রাজনীতির অনুরক্ত ছিলেন। পৌর বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। হবিগঞ্জে বিএনপিকে প্রতিষ্ঠার জন্য যে ক’জন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি ছিলেন তার অন্যতম। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল- যে কাজটি করার জন্য তিনি দায়িত্ব নিতেন তা সমাধা করতেনই। খোয়াই পত্রিকা তাঁর স্বপ্নের ফসল। এর কার্যক্রম তিনি শুরু করেছিলেন ১৯৮৭ সনে। এজন্য তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় পর্যন্ত ব্যাপকভাবে তদবির করেছিলেন। কিন্তু এরশাদের নিয়মের যাতাকলে পত্রিকাটি ছাড়পত্র পেতে ব্যর্থ হয়। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর বিচারপতি সাহাব উদ্দিন আহমেদের অস্থায়ী সরকারের সময় ১৯৯১ সালে খোয়াই পত্রিকা আলোর মুখ দেখে। কিন্তু ১৯৯০ সালের এই দিনে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজিজুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বড় ছেলে শামীম আহ্ছান প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে প্রায় ২৮ বছরেরও বেশী সময় ধরে খোয়াই পরিচালনা করছেন। মরহুমের ছোট ছেলে শাকিল আহ্ছান আমেরিকার মিশিগানে পরিবার নিয়ে বাস করছেন। বড় মেয়ে শায়লা পারভীন দীপা ঢাকায় এবং ছোট মেয়ে নায়লা পারভীন চম্পা কানাডার টরেন্টোতে বাস করছেন। মরহুম আলহাজ্ব আজিজুর রহমানের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে আমরা তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।