স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাটে মৃত্যুর ৩ মাস পর মায়িশা জান্নাত নামে আড়াই বছরের এক শিশুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় উপজেলার বাগবাড়ি কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব কান্তি বড়ুয়ার উপস্থিতিতে পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ শরিফ উদ্দিন লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে প্রেরণ করেন। এ সময় কবরের পাশে শত শত জনতার উপচেপড়া ভিড় ছিল। মৃৃত মায়িশা জান্নাত চুনারুঘাট উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মোছাব্বিরের কন্যা।
সূত্র জানায়, গত ৮ জুন বেলা ২টার দিকে চুনারুঘাট পৌর এলাকার বাগবাড়ি নানার বাড়ির পুকুরে ডুবে মারা যায় মায়িশা জান্নাত। কিন্তু মায়িশা জান্নাতের পিতা আব্দুল মোছাব্বির আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক পিবিআইকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আদেশ প্রদান করেন।
পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ শরিফ উদ্দিন জানান, মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়। পিএম রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তবে মৃত মায়িশার মা সেলিনা আক্তার জানান, ২০১৪ সালে মিরাশী ইউনিয়নের পাকুড়িযা গ্রামের হাজ্বী আব্দুর রশিদের ছেলে আঃ মোছাব্বিরের সাথে পারিবারিকভাবে তার বিবাহ হয়। বিয়ের কিছুদিন পর হতেই মোছাব্বির যৌতুক ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করত। নির্যাতনের বিষয় নিয়ে স্থানীয় পৌর মেয়র ও পৌর কাউন্সিলরসহ মুরুব্বিয়ান বেশ কয়েকবার সালিশ বিচার করেন। শালিশে অন্যায় অত্যাচার করবে না মর্মে মৌখিক অঙ্গিকার করলেও পুনরায় নির্যাতন করে স্বামী। তাদের কোলজুরে ২টি সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সন্তানদের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করে সংসার করে আসছেন গৃহবধূ সেলিনা। অবশেষে পাষন্ড স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে সেলিনা পিত্রালয়ে চলে আসেন। সেলিনার পিতা দরিদ্র অসহায় মুনছব উল্ল্যাহ আদরের নাতী নাতনীর ও মেয়ের অভাব অনটনের মাঝেও ভরণ পোষন করেন। সেলিনা আরও জানান, চলতি বছরের ৮ জুন দুপুরে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকায় অবুঝ সন্তান মায়িশা বসতবাড়ির পশ্চিম দিকে পুকুরে পড়ে মারা যায়। মারা যাওয়ার পর স্বামীকে সংবাদ দিলে স্বামী মোছাব্বির সন্তানকে দেখতে আসেনি। স্বামীর অপেক্ষা করে বিকেলে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী পিত্রালয়ের স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।