সড়ক বিভাগের ধারণা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হতে পারে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বললেন- সড়ক দুটি ৪ লেনে উন্নীত হলে হবিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কটি যানজটমুক্ত হবে। পাশাপাশি শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। এ জন্য সড়কের দু’পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখনও উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে

এসএম সুরুজ আলী ॥ প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক ও হবিগঞ্জ শহরের কামড়াপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পর্যন্ত বাইপাস সড়কটি রোড ডিভাইডার দিয়ে প্রশস্ত করে ৪ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। ইতোমধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম গত ৯ জুলাই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্কেচম্যাপ তৈরিসহ প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন। শ্রীঘ্রই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। এ দুটি সড়ক ৪ লেনে উন্নীত হলে হবিগঞ্জবাসীর যোগাযোগ দুর্ভোগ লাঘব হবে। ঢাকা-সিলেটে যাতায়াত আরো সহজ হবে।
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল হবিগঞ্জ শহরকে যানজট মুক্ত করা। পাশাপাশি হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক ও বাইপাস সড়ককে উন্নত করার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন এমপি আবু জাহির। এরই অংশ হিসেবে তিনি মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠান। এতে তিনি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর গত ১১ বছরে সারাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় শিল্প এলাকা গড়ে উঠাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে হবিগঞ্জ একটি আলোকিত অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লোকজন ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকুরীর কারণে এখানে বসবাস এবং যাতায়াত করছেন। এছাড়াও জেলা শহর থেকে মহাসড়কে আসা-যাওয়ার জন্য হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি ও শায়েস্তাগঞ্জ থানা থেকে হবিগঞ্জ শহরের কামড়াপুর পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুটি সড়কের দীর্ঘদিনের পুরাতন ও সরু হওয়ায় এবং অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকায় প্রায় সময় যানজট লেগে থাকার পাশাপাশি ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। যে কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসা-যাওয়া করা যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তাই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের স্বার্থে এ দুটি সড়কটিকে ডিভাইডার দিয়ে প্রশস্ত করে ৪ লেনে উন্নীতকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি অনুরোধ জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে।
হবিগঞ্জ জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক ও শহরের কামড়াপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পর্যন্ত বাইপাস সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই দুটি সড়ক ৪ লেনে উন্নীত হলে শহরের প্রধান সড়কের উপর থেকে যানবাহনের চাপ অনেকটা কমে যাবে। প্রধান সড়কটি যানজট মুক্ত হবে। পাশাপাশি শহরের জলাবদ্ধতাও নিরসন হবে। ওই দুটি সড়ক ডিভাইডার দিয়ে প্রশস্ত করে ৪ লেনে উন্নীত করা হলে যাতায়াতে দুর্ভোগ অনেকটা কমে যাবে। এ জন্য ইতোমধ্যে সড়কের দু’পাশে থাকা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখনও আমাদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম আরো জানান, ওই দুটি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের জন্য সংসদ সদস্য মোঃ আবু জাহির মন্ত্রণালয়ে যে ডিও লেটার পাঠিয়েছেন সেই ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে চিঠি এসেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, দুটি সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজটি সম্পন্ন করার জন্য কি কি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এর প্রতিবেদন পাঠাতে। ২টি সড়কের প্রায় ২৪ কিলোমিটার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য শীঘ্রই আমরা স্কেচ ম্যাপ তৈরির কাজ করছি। সকল কাজ শেষ করে খুব শ্রীঘ্রই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী প্রকল্প দুটি ডিভাইডার দিয়ে প্রশস্ত করে ৪ লেন বাস্তবায়ন করা হলে এর সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প বলে জানান তিনি।