২৪ ঘন্টার ভিতরে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের শহরের গরুর বাজার এলাকা থেকে সরকারি চাল আটকের ঘটনায় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তদন্তে আটককৃত ২ হাজার বস্তার মাঝে ৮৮০ বস্তা চাল ভিজিএফ এর বলে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মর্জিনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভিজিএফ এর চাল পরিবহণের জন্য হবিগঞ্জের খাদ্য গোদাম রোডের সুরমা অটোরাইছ এন্ড ফ্লাওয়ার মিলের মালিক ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। ভিজিএফ এর উক্ত ৮৮০ বস্তা চাল তিনি শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্য গোদাম থেকে মাধবপুরে পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা মাধবপুরে না নিয়ে হবিগঞ্জ শহরে নিজের গোদামে নিয়ে আসেন। সেখানে ট্রাক থেকে নামানোর সময় এসব চাল আটক করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে এসব চাল নিয়ে যাওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। আর বাকি প্রায় ১ হাজার ২শ’ বস্তা সরকারি চাল তিনি বৈধ ভাবে ক্রয় করেছেন। সেগুলোর কাগজপত্র তার কাছে রয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মর্জিনা আক্তার জানান, চালগুলো পরিবহণের জন্য তাকে যে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে সে বিষয়ে তার কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু চাল মাধবপুরে না নিয়ে তিনি হবিগঞ্জে নিজের গোদামে নিয়েছেন। এটি অন্যায়। তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ চালগুলো দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য দেয়া হয়েছিল। এর পূর্বে ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খান তদন্ত কমিটির কাছে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগের কাগজপত্র হাজির করেন। এ সময় তিনি জানান, গাড়ীর চাকায় সমস্যা হওয়ায় গাড়ী মেরামতের জন্য চালগুলো হবিগঞ্জে নিয়ে এসেছেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, আটককৃত চাল যে সরকারি এটি তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয়েছে। এ চালগুলো শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্য গোদাম থেকে মাধবপুরে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু যাদের সাপ্লাই দেয়ার কথা তারা কু-মতলব করে গোদামে নিয়ে এসেছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের খাদ্য গোদাম রোড (গরুর বাজার) এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খানের মালিকানাধীন সুরমা অটোরাইছ এন্ড ফ্লাওয়ার মিলের গোদামে অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছিন আরাফাত রানা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিছুর রহমান। অভিযানকালে তারা দেখতে পান সরকারি বস্তার চাল খোলে অন্য বস্তায় ডুকিয়ে প্যাকেট করা হচ্ছে। এ সময় গোদাম থেকে এক ট্রাক চালসহ প্রায় ২ হাজার বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ২৪ ঘন্টার ভিতরে প্রতিবেদন দাখিল করে।