সুমন আহমেদ বিজয়, লাখাই থেকে ॥ ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন নতুন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। লাখাই উপজেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য না হলেও ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। মৎস্য ও কৃষি ভান্ডার খ্যাত লাখাই উপজেলায় কর্মজীবী মানুষের বেশি ভাগই বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে অবস্থান করেন। যারা ইতোমধ্যে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ উদযাপনের লক্ষে নিজ এলাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউবা আবার এসেছেনও। আগত স্বজনরা ডেঙ্গু বয়ে আনছেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় বাড়িতে অবস্থানরত পরিবার পরিজন। আগত স্বজনদের কাছ থেকে ডেঙ্গুর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে কিনা এই আতঙ্ক এলাকাবাসীর মাঝেও।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাসুম এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান- ঢাকা বা অন্য কোথাও থেকে যদি কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে তবে পরিবারের অন্য যে কেউ এতে আক্রান্ত হতে পারে, যদি এডিস ইজিপ্টি মশা থাকে। অন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এখন পর্যন্ত লাখাইর স্থানীয় কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত নেই। যদি আসে তাহলে দেখা যায় সে অন্য কোন এলাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছে। লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু জ্বর সংক্রান্ত চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আক্রান্তদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যদি কোন ব্যক্তির তিনদিনের উপরে জ্বর, শরীর ব্যাথা, বমির ভাব, শরীর দুর্বল, মাথা ঘুরানো ও অরুচি দেখা দেয় তাহলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গুর বিস্তাররোধে প্রতিটি মসজিদে জনসচেতনতার লক্ষে খুতবার সময় আলোচনার জন্য মসজিদের ইমামদের প্রতি আহবান জানান তিনি। প্রতিটি বাড়িতে ডেঙ্গু মশা বিস্তার রোধে করণীয় বিষয়গুলি তুলে ধরে মাইকিং এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত ব্যানার সাটানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করে তিনি।
এদিকে গত ৬ আগস্ট লাখাই’র স্বজনগ্রামের গাংপাড়হাটির আন্জব আলীর ছেলে নূর আলম (২১) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সে নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরতে যায়। রাতে বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফিরে আসার পর তার জ্বর অনুভূত হলে পরদিন সকালে স্থানীয় ডাক্তারদের পরামর্শে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানান সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে ৬ থেকে ৮ আগস্ট চিকিৎসা গ্রহণের পর অবস্থার অবনতি হলে ৯ আগস্ট তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
নূর আলমের বাবা আন্জব আলী জানান, তার ছেলে এলাকায় থাকে এবং মাছ ধরা পেশার সাথে জড়িত। তাই সে এলাকার বাইরে যায় না বললেই চলে। সে এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু কখন মশা তাকে কামড় দিয়েছে সে বলতে পারে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com