স্টাফ রিপোর্টার ॥ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিজগাঁও (মাস্টার বাড়ি) এলাকায় পিতার মৃত্যু সনদ জাল করে প্রতিপক্ষের সম্পত্তি দখল ও পায়তারার অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত চালক মোঃ আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে। তিনি নিজের মৃত পিতাকে জীবিত দেখিয়ে একই এলাকার মোঃ নাজমুল হাসান ফরহাদের পিতা মৃত এম. এ হান্নানের সম্পত্তিতে অংশিদার দাবি করে তার সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তিনি কাগজপত্র জালিয়াতি করে কিছু জায়গা দখল করেও রেখেছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গত ৪ জুন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মৃত এম. এ হান্নানের ছেলে মোঃ নাজমুল হাসান ফরহাদ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুর রশিদ তার পিতা মৃত আব্দুর নুরকে জীবিত দেখিয়ে একই এলাকার নাজমুল হাসান ফরহাদের পিতা মৃত এম. এ হান্নানের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে আসছেন। আব্দুর রশিদ তার পিতা আব্দুর নূর ১৯৮০ সালের ১৭ নভেম্বর মারা গেছেন উল্লেখ করে তার লাশ রেলযোগে ঢাকা থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নেয়ার অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত ডিআরএম ঢাকা কর্তৃক শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন মাস্টারের কাছে প্রেরিত একটি চিঠি তৈরী করেন। যার বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ঢাকা কন্ট্রোল আদেশ নং-৭৬। পরবর্তিতে আব্দুর রশিদ ওই ভূয়া চিঠি হবিগঞ্জে বিভিন্ন দেওয়ানী আদালতে জমা দিয়ে তার পিতা ১৯৮০ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে দাবি করেন। যা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সচেতন নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, ১৯৬৯ সালে আব্দুর নূরের অপর ছেলে মোঃ কমরু মিয়ার কাছ থেকে নাজমুল হাসান ফরহাদের পিতা এম. এ হান্নান একটি জায়গা ক্রয় করেন। যার দলিল নং- ৪৬১১/১৯৬৯। ওই দলিলে কমরু মিয়া তার পিতা আব্দুর নুরকে মৃত বলে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ১৯৭৬ সালের ৭ ডিসেম্বর তৈরীকৃত কমরু মিয়ার ভোটার তালিকায় তার পিতা আব্দুর নুর মৃত বলে উল্লেখ রয়েছে। যার ক্রমিক নং-৩৮, নির্বাচনী এলাকার নম্বর ও নাম ২৪০ সিলেট ১৮ ও ৮নং শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড, গ্রাম চরনুর আহমাদ উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে ১৯৬৯ সালের দলিলে মোঃ আব্দুর রশিদের পিতা আব্দুর নুর মৃত বলে উল্লেখ আছে, সেখানে আব্দুর রশিদ তার পিতা ১৯৮০ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে উল্লেখ করে বিভিন্ন কাগজপত্র জালিয়াতি করে সেগুলো আদালতে ব্যবহার করে নাজমুল হাসান ফরহাদসহ এলাকার সাধারণ মানুষদের হয়রানী করছেন। পাশাপাশি নাজমুল হাসান ফরহাদের পিতার সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
নাজমুল হাসান ফরহাদের অভিযোগ- আব্দুর রশিদ তাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, নামে-বেনামে চিঠি ও মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছেন। আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।