অসুস্থতার জন্য মেয়র প্রার্থীতা থেকে সরে গেলেন আওয়ামী লীগ নেতা মর্তুজ আলী

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থী এবং তাদের কর্মী সমর্থকদের অপেক্ষার পালা শেষ হতে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার অথবা আগামীকাল শনিবার কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হতে পারে দলীয় প্রার্থীদের নাম। এর পর শুরু হবে ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের ভোট ও দোয়া সহযোগিতা প্রার্থনা।
হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় পদে মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেন। আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঢাকার ধানমন্ডিস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এবং বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এবার অপেক্ষার পালা কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন।
হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় একক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য হবিগঞ্জ থেকে ৯ জনের তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, হবিগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান মিজান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মর্তুজ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতা একেএম নুর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শংখ শুভ্র রায়, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ নুরুল আমিন ওসমান ও পৌর আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শেখ তারেক উদ্দিন সুমন।
অপরদিকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর প্রচেষ্টা চালান জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইসলাম তরফদার তনু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম, জেলা যুবদল সভাপতি মিয়া মোঃ ইলিয়াছ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব আহমেদ রিংগন। প্রত্যেকে কেন্দ্রে জোর লবিং করেন।
এদিকে হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়ন প্রত্যাহার ১১ ফেব্রুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরই মূলত প্রার্থীরা নড়ে চড়ে বসেন। দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গতকাল রাতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ৯ জনের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হলেও মনোনয়ন ফরম জমা দেন ৮ জন। তারা ভিন্ন ভিন্ন তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেন। তবে আওয়ামী লীগের তালিকায় ৪ নম্বরে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মর্তুজ আলী মনোনয়ন ফরম জমা দেননি। এ ব্যাপারে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান, সম্প্রতি তার মাইন স্ট্রোক করেছে। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। তাই এবার তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তবে চিকিৎসা গ্রহণের ফলে আগের চেয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
এদিকে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসুর কাছে মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এর আগে ২১ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়। বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেতে যারা মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তারা হলেন- জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইসলাম তরফদার তনু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম, জেলা যুবদল সভাপতি মিয়া মোঃ ইলিয়াছ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ ও জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব আহমেদ রিংগন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আগ্রহী প্রার্থী ৬ জন হলেও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ মনোনয়ন ফরম জমা দেননি।