এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ শহরের পুরান বাজার থেকে গরুর বাজার সড়কটি ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু পানি জমে। ওই পানি ৬/৭ দিনেও রাস্তা থেকে নামছে না বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। যার ফলে রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাকারী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের দের চরম দুর্ভোগে শিকার হতে হচ্ছে। পুরান বাজার ও বগলা বাজার হবিগঞ্জ শহরের ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। ওই এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা থাকার কারণে এখানকার ব্যবসায়ীদের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন এ রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষকে দীর্ঘদিন পূর্বে অবগত করা হলেও তারা কোন প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। যার ফলে জনদুর্ভোগ দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। অপর দিকে পুরান বাজার মাছ থেকে বগলা বাজারের জিওসি রাস্তাটি ময়লা-আবর্জনা ও পানি জমে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে। এই রাস্তার দু’পাশের ড্রেন ময়লা-আবর্জনা জমে ভরে গেছে। এ রাস্তা দিয়ে সাধারণ লোকজন চলাচল করতে পারছেন না।
তবে পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘব করতে খুবই শ্রীঘ্রই রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় দু’বছর ধরে পুরান বাজার, বগলা বাজার হয়ে গরু’র বাজার রাস্তার বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বগলা বাজার স্বর্ণপট্টি এলাকার রাস্তায় গত বছর সংস্কার কাজে হাত দিয়ে মেকাডম করলেও রহস্যজনক কারণে ঠিকাদার রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ ফেলে চলে যান। যার ফলে আজ পর্যন্ত রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। সেখানেও জলাবদ্ধতা এবং কাদা সৃষ্টি। বিশেষ করে পুরান বাজারের ব্যবসায়ী রিচি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিয়া মোঃ ইলিয়াছের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বগলা বাজারের ইছাক-সাফিয়া মার্কেট পর্যন্ত রাস্তা ভেঙ্গে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখানে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচলকারী স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীদের হাঁটু পানি ভেঙ্গে চলাচল করতে হচ্ছে। এ পানির উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। যানবাহন চলাচল করার সময় পানি ছিটকে দোকানের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পুরান বাজার ও বগলা বাজারের ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের দোকানে ক্রেতা যাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে পুরান বাজারের ব্যবসায়ী কাজল মিয়া জানান, দু’বছর ধরে বর্ষা মৌসুম এলেই একটু বৃষ্টি হলে আমাদের দোকানের সামনে রাস্তায় পানি জমে হাঁটু উপরে উঠে যায়। রাস্তার দু’পাশের ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে জমা পানিগুলো বের হতে পারছে না। আবার কয়েকদিন পানিগুলো জমে থাকায় পচন ধরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে। এমন পানি ভেঙ্গে ক্রেতারা আমাদের দোকানগুলোতে আসতে চাচ্ছেন না। এ অবস্থায় দোকানগুলোতে আগের তুলনায় কম বেচাকেনা হচ্ছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি (ব্যকস) এর সভাপতি শামছুল হুদা জানান, দু’বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের এখানে রাস্তায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার দু’পাশের ড্রেন সংস্কারের অভাবে পানি চলাচল করতে পারছে না। বৃষ্টির পানি জমে রাস্তায় হাঁটু পানি হচ্ছে। ওই পানি দিয়ে পরিবহন চলাচল করায় পানি ছিটকে দোকানের ভিতরে গিয়ে আমাদের উপরে পড়ে যাচ্ছে। এতে অনেকেরই নামাজের কাপড় নষ্ট হচ্ছে। যার ফলে অনেকেই নামাজ পড়তে পারছেন না। বর্তমানে রাস্তাটির করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার ব্যবসায়ীসহ পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় এলাকার দোকানপাটে ব্যবসা মান্দা যাচ্ছে। কোন দোকানেই ক্রেতারা পচা পানি ভেঙ্গে যেতে চাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য তিনি পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়রের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান জানান, রাস্তার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের টেন্ডার হয়ে গেছে। উন্নয়ন কাজ শুরু করার জন্য আমি ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছি। আশা করি ঠিকাদার খুব শ্রীঘ্রই রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করবেন।
রাস্তা দিয়ে জনগণ চলাচল করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com