আজমিরীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েও উভয়পক্ষ হাতাহাতি করে ॥ সংঘর্ষে মহিলাসহ অর্ধশতাধিক আহত ॥ ৬ দাঙ্গাবাজ আটক

এসএম সুরুজ আলী/স্বপন বণিক ॥ আজমিরীগঞ্জের পিরিজপুর গ্রামে এক কলেজছাত্র টমটম চালককে ‘তুই’ বলে অসম্মান করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মহিলাসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ১৫ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যান্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে আবারও দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ৬ দাঙ্গাবাজকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে পিরিজপুর গ্রামের বাসিন্দা সামছু মিয়ার ছেলে আজমিরীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র নাসির উদ্দিন কলেজের ছুটি শেষে বাড়িতে যাওয়ার জন্য একই গ্রামের বিল্লাল মিয়ার পুত্র কাপ্তান বিল্লাহর টমটমে (ইজিবাইকে) উঠেন। গাড়ী থেকে নামার সময় ভাড়া দিতে গিয়ে নাসির টমটম চালক কাপ্তান বিল্লাহকে ‘তুই’ সম্বোধন করেন। এতে কাপ্তান বিল্লাহ বিক্ষুব্ধ হয়ে নাসিরকে বলেন- তোর চেয়ে বয়সে আমি অনেক বড়। আমাকে ‘তুই’ কেমনে বললে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিত-া হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার দুপুরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে বদলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুশেনজিৎ চৌধুরীসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মোশারফ হোসেন তরফদারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘন্টাব্যাপি সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উভয়পক্ষের লোকজন আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং সংঘর্ষে জড়িত ৬জনকে আটক করেন। আটককৃতরা হলেন মুহিত মিয়া (৪৫), হাফিজ উদ্দিন (৩৫), এরশাদ আলী (২৮), মো. পারভেজ (২১), নুর মিয়া (৫০), মহসিন (৩০)।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন ইউপি সদস্য মনসুর আলী (৩২), কুতুব আলী (৩০), হাসান মিয়া (২৫), সেকুল মিয়া (৩৫), গুলনেহার বেগম (৪০), জহির ইসলাম (৩০), ফজলুর রহমান (১৮), নজরুল মিয়া (৫২), মফিজুল আলম (২২), শরীফ মিয়া (২৫), মঈন উদ্দিন (৩০), আলিম (২৫), হৃদয় (২০), তারেক শেখ (১৭), মাসেক মিয়া (৩০), টিটু (২২), নয়ন মণি খাঁ (৩০), হাসিয়া বেগম (৪০), ইলিয়াস মিয়া (৫৫), বাবুল (৩০), মনির হোসেন (২১), গোলাম রাব্বি (৪৮), আলমগীর মিয়া (২৫), ওসমান (৩৫)।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন তরফদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া হাসপাতালে সংঘর্ষে জড়ানোর কারণে ৬ দাঙ্গাবাজকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন সংঘর্ষে জড়িত না থাকায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।