ফেসবুক ভাইরাল
স্টাফ রিপোর্টার ॥ পেছনে সবুজ রঙের পাঞ্জাবি পরে সড়কে সারিবদ্ধভাবে বাইক চালাচ্ছে বন্ধুরা। আর সবার সামনে সেজেগুজে এক তরুণী। সাহসী ভঙ্গিতে বাইক চালাচ্ছেন তিনিও। কারণ, সেদিন ছিল ওই তরুণীর গায়ে হলুদের দিন। আর তাই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এমন অভিনব পরিকল্পনা করেন তিনি।
এর মধ্যেই সেদিনের সেই বাইক চালানোর ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ হওয়ার পর মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যান তরুণী। বাইক চালিয়ে ভাইরাল হওয়া ওই তরুণীর নাম ফারহানা আফরোজ ড্রিমি। যশোর শহরের সার্কিট হাউসপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সম্পন্ন করেছেন এমবিএ। গত ১৩ আগস্ট ছিল তাঁর গায়ে হলুদ আর ১৪ আগস্ট বিয়ের অনুষ্ঠান।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সঙ্গে বিয়ে হয় ফারহানার। রাফি পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি গাজীপুরে থাকেন। বাইক চালিয়ে ভাইরাল হওয়া ছাড়াও আরো এক পরিচয় আছে ফারহানার। তিনি একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা ববিতা, সুচন্দা, চম্পার ভাতিজি। ফারহানার বাইক চালানো শুরু ২০০৭ সাল থেকেই। নিজে যেহেতু বাইক চালাতে পারেন, তাই গায়ে হলুদের দিনটিকে একটু ব্যতিক্রমীভাবে উদযাপনের ইচ্ছা তৈরি হয় তাঁর মধ্যে। তিনি নিজেই বন্ধুদের নিয়ে এ পরিকল্পনা করেন। এ ছাড়া হলুদের অনুষ্ঠান বন্ধুদের সঙ্গে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন ফারহানা।
ফারহানা আফরোজ জানান, গায়ে হলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠান স্মৃতি করে রাখতেই পেশাদার ক্যামেরাম্যান দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। বিয়ের পরে সেই ছবি ও ভিডিও বন্ধু-বান্ধবরা ফেসবুকে পোস্ট করে। এরপর থেকেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি বেশ আনন্দ পেয়েছি। আমার বাবার পরিবার ও স্বামীর পরিবারের সদস্যদের এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। সমস্যা যা দেখছি তা আমার ফ্যান ফলোয়ারদের।
হলুদ বা নীল কিংবা হোক না সবুজ- এরকম রঙিন পোশাকে কনে সেজে হাতে গাঁদা ফুলের মালা আর নির্ধারিত আসনে বসে গায়ে হলুদ মাখা সে তো পুরোনো নিয়ম। বিংশ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে ডিজিটাল যুগের মেয়েও যদি সেভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করে বিয়ের কনে হিসেবে তাহলে পরিবর্তন কি হলো। তাই নিজেকে ভিন্ন রুপে তুলে ধরতেই যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ তার বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে আজ দেশব্যাপী আলোচিত সমালোচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহানা আফরোজ বলেন, ‘ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্যে আমি কিছুই করিনি। আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরবাইক চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করছে। আমিও নিজে মোটরবাইক চালাতে পারি। ছেলেরা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মোটরবাইক নিয়ে যেতে পারলে আমি মেয়ে হয়ে কেন পারবো না। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই করার জন্যই মূলত এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’