কাগজপত্র সঠিক না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরতলীর ধুলিয়াখাল বিসিক শিল্পনগরীর ভেতরে গড়ে উঠা অবৈধ মবিল কারখানার তালা খুলে দেয়া হয়েছে। তবে কাগজপত্র সঠিক না করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার ওই ফ্যাক্টরির তালা খুলে মালিকপক্ষ ভিতরে প্রবেশ করেন। তবে যাবতীয় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। মবিল ফ্যাক্টরি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে এবং পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেছেন। ওই ফ্যাক্টরি বন্ধ হওয়াতে এলাকাবাসী সুস্থভাবে জীবন যাপন করছেন। সংবাদের সূত্র ধরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক ম-লের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গত রবিবার অভিযান চালিয়ে ফ্যাক্টরিতে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া আর কোন কাগজপত্র নেই তাদের। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠা মবিল কারখানার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছিল এলাকার পরিবেশ। আশপাশের পানিতে জীবানু ছড়িয়ে পড়ায় মারা যায় হাঁস-মুরগিসহ গৃহপালিত পশু। মানুষের মধ্যেও দেখা দেয় খিচুনিসহ বিভিন্ন রোগ বালাই। কারখানার দুষিত বর্জ্যের গন্ধে আশপাশের বাসিন্দাদের নাকে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হয়। এমন একটি সংবাদ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর অভিযান চালায় প্রশাসন। জানা যায়, ওই এলাকায় কমিনেট গ্লোব নামের একটি মবিল কারখানা স্থাপন করেছেন মহসিন হাওলাদার ও সেলিম রেজা নামে দুই ব্যক্তি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই মবিল কারখানার বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্র্ভূতভাবে মবিল কারখানাটি গড়ে তুলেছেন তিনি। মবিল কারখানায় মবিল প্রক্রিয়াজাতকরণে তাদের কোনো টেকনিশিয়ান নেই। এখানে কর্মরত ওয়ার্ক এসিস্টেন্ট তজমুল নিজেকে টেকনিশিয়ান দাবি করেন। কিন্তু তার কাছে অভিজ্ঞতার কাগজপত্র চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। এদিকে মবিল কারখানার দূষিত কালো পানি আশপাশের খাল ও জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে জমির ফসল নষ্ট হওয়াসহ খালের মাছসহ জলজ প্রাণি মরে যাচ্ছে। এলাকাবাসির পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে নিষেধ করা হলেও কর্ণপাত করছেন না ওই কারখানার মালিকপক্ষ। এনিয়ে ইতোপূর্বে সামাজিকভাবে আন্দোলনও করা হয়। কিছুদিন বন্ধ থাকার পরও আবারও কারখানাটি চালু করা হয়েছে। এছাড়া ওই ফ্যাক্টরিতে কোন ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশান না থাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে এলাকাবাসী।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বাজার থেকে গাড়ির জ¦ালানো মবিল কম দামে কিনে এনে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করছেন। ফলে ওই মবিল ব্যবহার করায় অনেকের গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। তারা বিভিন্ন কোম্পানীর স্টিকার ব্যবহার করে নিজেদের প্রোডাক্ট বলে মবিল বিক্রি করছেন এমনও অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে তজমুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ব্লিচিং পাউডার ও পোড়া মবিল দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। বিএসটিআইর অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসে নেই।
এ ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর জিএম নাজমুল হোসেন জানান, কাগজপত্র সঠিক করে নিয়ে আসার শর্তে তালা খুলে দেয়া হয়েছে। তবে কাজ বন্ধ রয়েছে।