ইউএনও বললেন বিস্ফোরণের কারণ জানতে আসবে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা ॥ ওসি বললেন বয়লারের কোন ত্রুটির কারণেই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জে অটো রাইস মিলের বয়লার বিস্ফোরণে নাসির মিয়া (৩৪) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত আরো ৫ জন। গতকাল বুধবার সকালে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডস্থ টেকাদিঘী অটো রাইস এন্ড বয়লার মিলসে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির মিয়া উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের ভূবিরবাক গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এদিকে বিস্ফোরণের কারণ জানতে বিস্ফোরক অধিদপ্তর এর বয়লার বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা এসে পরীক্ষা করবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সকালে ওই মিলের ফায়ারম্যান নাসির মিয়াসহ কয়েকজন শ্রমিক ধান সিদ্ধ দেওয়ার কাজ শুরু করে। হঠাৎ কাজের শেষ দিকে বিকট আওয়াজ করে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই ফায়ারম্যান নাসির মিয়া নিহত হন। তার শরীরের বিভিন্ন অংশ খ- খ- হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে। এ ঘটনায় আহত হন অন্তত আরো ৫ জন। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতংক ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। বাসা-বাড়ির নারী-পুরুষ শিশুরা আতংকে ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যান। আবার অনেকেই প্রথমে ভূমিকম্প ভাবলেও পরে বিস্ফোরণের খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান।
ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠায় এবং অপর আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন- কাদির মিয়া (৩৯), নিতাই দাশ (৪০), রিনা রাণী দাশ (৪০), মিলন দাশ (৪৫), শফিকুর রহমান (৩৫)।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, তাৎক্ষনিক সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, টেকাদিঘী অটো রাইস ও বয়লার মিলটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেক পুরাতন বয়লারের কোন ত্রুটি আছে কি-না তা জানতে ঢাকা থেকে বিস্ফোরক অধিদপ্তর এর বয়লার বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা এসে পরীক্ষা করবে। পরে জানা যাবে কি কারণে বিস্ফোরণ ঘটলো।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান জানান- থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর মর্গে প্রেরণ করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বয়লারের চুলায় কোন ত্রুটির কারণেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এদিকে মর্মান্তিক এ ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল, পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীসহ অনেকেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।