গ্রেফতার আতংকে আহতরা বিভিন্ন স্থানে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ ॥ ঘটনাস্থল থেকে ৫ শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচংয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পুলিশসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তত ২৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৫ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। এ সময় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন দাঙ্গাবাজকে আটক করা হয়। এদিকে গ্রেফতার আতংকে আহতরা বিভিন্ন স্থানে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জমি দখলকে কেন্দ্র করে বানিয়াচং উপজেলা সদরের দোয়াখানী এবং প্রথমরেখ গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে বুধবার রাতে দোয়াখানী গ্রামের ছামির উদ্দিনকে (৪৫) রাস্তায় মারপিট করে প্রথমরেখ গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে দিলু মিয়া (২৬)। এ বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রামের লোকজন একে অপরের উপর হামলা চালালে উভয়পক্ষে ভয়ানক সংঘর্ষ বাঁধে। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে উল্লেখিত সংখ্যক লোক আহত হয়। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মোঃ সেলিম ও ওসি রঞ্জন কুমার সামন্ত’র নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক পর্যায়ে দাঙ্গাবাজরা রাস্তায় ও ঘরের পাশে খড়ে আগুন লাগিয়ে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। ফায়ার সার্ভিস বানিয়াচং ইউনিটের কর্মীরা প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী ও পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে ঘটনার পরপরই পুলিশ বিভিন্ন পাড়ায় অভিযান চালিয়ে ৫ শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন দাঙ্গাবাজকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ রঞ্জন কুমার সামন্ত জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ পুলিশের জোরালো পদক্ষেপে ভয়াবহ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম জানান, ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সংঘর্ষ খুবই দুঃজনক। এ ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ জন্য তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।