স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এককালে সাপ খেলা ও গান বাজনা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করলেও এ সম্প্রদায় কালের বির্বতনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলে এদের জীবন। কখনো এ ঘাটে আবার কখনো অন্য ঘাটে সাড়ি বাধাঁ নৌকায়ই কাটে তাদের জীবন সংসার। বড় বড় হাট বাজার বা বৃহৎ জনপথের পাশে কোন নদী-নালায় একসাথে দলবদ্ধ হয়ে অস্থায়ী তাবু তৈরি করে বসবাস করে তারা। তাদের নির্দিষ্ট চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী পুরুষরা নেয় সংসার দেখাশুনার দায়িত্ব। আর পরিবারের ভরণ-পোষনসহ সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর যোগানদাতা বেদে নারীরা। সাপ খেলা দেখানো তাদের পেশা হলেও তারা ঝাঁড়, ফকুঁ, বাথের ব্যথা, সিঙ্গা লাগানো, দাতেঁর পোকা খোলাসহ আরও অনেক কাজ করে থাকে। তবে কালের বিবর্তনে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি ও জনমানুষের সচেতনতার ফলে তা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে মাঝে-মাঝে আদালতপাড়া, সদর হাসপাতাল গেইট, হাটবাজারসহ বিভিন্নস্থানে মজমা বসিয়ে সাপ খেলা দেখানোসহ বিভিন্ন তাবিজ বিক্রি করতেও দেখা যায় পুরুষ বেদেদের।
হবিগঞ্জ শহরের মাছুলিয়া এলাকার খোয়াই নদীর চরে বসবাসকারী ঝুমা ও শাহেনা বলেন, জন্ম থেকেই আমরা যাযাবর। আমাদের নির্দিষ্ট কোন বাসস্থান নেই। কোন এনজিও, সরকারি বা অন্যকোন প্রতিষ্ঠান আমাদের আর্থিক সাহায্য বা ঋণ দেয় না। ফলে আমাদের পুরুষরা অর্থাভাবে বিকল্প কোন পেশা বা ব্যবসা করতে পারে না। আর তাই চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী আমাদের-ই পরিবারের ভরণ পোষন করতে হয়। কিন্তু মানুষ আজ অনেক সচেতন। আমাদের চিকিৎসা বা তন্ত্রে-মন্ত্রে আর বিশ^াসী নয় তারা। আমাদের সংসার খুবই কষ্টে চলে। দিনে দু’একবার না খেয়েও থাকতে হয়।