স্টাফ রিপোর্টার ॥ লাখাই উপজেলার মোড়াকরি গ্রামের বাসিন্দা ছাত্র শিবির নেতা লুৎফুর রহমান ভুইয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মহাপরিচালক ও হবিগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপ-পরিচালকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন একই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আহম্মদ আলীর ছেলে জসিম মিয়া।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মোড়াকরি গ্রামের বাসিন্দা মৃত তৈয়ব মিয়া ভূইয়ার ছেলে উপজেলা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী লুৎফুর রহমান ভূইয়া ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি দলিল লেখকের সনদ পেয়ে নিজে ভূয়া ওয়ারিশান তৈরি করে ও জাল জালিয়াতি দলিল সৃষ্টি করে এলাকার সাধারণ মানুষের ভূমি আত্মসাত করছেন। ৬/৭টি জাল দলিল সৃষ্টি করে লুৎফুর রহমান এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করেছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু এসব অভিযোগের প্রতিকার না পাওয়ায় তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার বিরুদ্ধে এলাকার নিরীহ লোকজনদের নির্যাতনেরও বহু অভিযোগ রয়েছে। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত লুৎফুর রহমান ভূইয়া ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই মোড়াকরি গ্রামের দাস পাড়ার ১৫৫৫ খতিয়ানের ২৭৯০ দাগের বাজারের ভিটা তার লোকজন নিয়ে দখল করতে যায়। এ সময় ভূমির মালিক সুকুমার দাস গং বাধা দিলে তাদের উপর লুৎফুর রহমান ভূইয়া গং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় সুকুমার দাসসহ ৭ জন আহত হন। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ও সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় সুকুমার দাস বাদী হয়ে লুৎফুর রহমান ভূইয়া গংদের বিরুদ্ধে লাখাই থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১২৭/১৮ইং। এছাড়াও সুকুমার দাস লুৎফুর রহমান ভূইয়ার জাল জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ধরে লাখাই উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) লুৎফুর রহমানের নামজারী বাতিল করে তার ওই ভূমি সুকুমার দাসের পিতা নিবারন দাসের নামে পুনর্বহাল করেন। এছাড়াও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, লুৎফুর রহমান ভূইয়ার বিরুদ্ধে লাখাই থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩টিসহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জাল দলিল সৃষ্টির মামলা নং ৯/১৯ইং লুৎফুর রহমান তার স্ত্রী রায়হানা বেগমসহ ১০জন জাল চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছে আদালত। বর্তমানে লুৎফুর রহমান ভূইয়া উক্ত মামলায় পলাতক রয়েছেন। লুৎফুর রহমান ভূইয়ার বিরুদ্ধে জাল দলিল সৃষ্টির অভিযোগে তার দলিল লেখকের সনদ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলেও স্থায়ীভাবে বাতিল না করায় তার অপকর্ম দিন দিন বেড়ে চলেছে। ইদানিং লুৎফুর রহমান ভূইয়া নতুন কৌশল অবলম্বন করেছেন। তিনি এখন তার ভাই, ভাতিজা ও আত্মীয়দের দিয়ে অভিযোগকারীসহ তার চাচাত ভাই হাজী নোমান মোল্লাসহ বিভিন্ন লোকজনদের হয়রানি করার জন্য ও তার অপকর্ম ঢাকার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। হয়রানীর শিকার নোমান মোল্লা শিবির নেতা লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।