কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল রুবেল

আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ বি-বাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ স্টেশনে উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের সংঘর্ষে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ৩ জন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নের উলুকান্দি গ্রামের পশ্চিম তালুকদার বাড়ির আব্দুর রহমান ফটিক মিয়া তালুকদারের ছেলে রুবেল মিয়া তালুকদার (২৫), মিরাশী ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের মৃত আবুল হাসিম মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (৩০) এবং আহমদাবাদ ইউনিয়নের ছয়শ্রী গ্রামের আঃ ছালামের স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৬২)। নিহতরা সবাই উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন। এছাড়া উপজেলার শাহিন ও জনি নামে আরো দুজন গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। এদিকে নিহতদের পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।
সকালে নিহতদের পরিবারে মৃত্যু সংবাদ পৌছার পরই তাদের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে। খবর পেয়ে বাড়িতে আত্মীয় স্বজনসহ এলাকাবাসীর ভিড় জমে। এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দুপুরে নিহত পীরেরগাঁও গ্রামের সুজন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা বোনসহ আত্মীয় স্বজনরা কান্নাকাটি করছেন। বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
নিহত সুজন লেখাপড়া করতো পাশাপাশি স্থানীয় সাবরেজিস্ট্রার অফিসে মুহুরীর কাজ করতো। উন্নত জীবনের আশায় সে একটি সরকারি চাকুরির ইন্টারভিউ দিতে উদয়ন এক্সপ্রেসে করে ঘটনার রাতে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল বলে তার পরিবার জানায়। কিন্তু চাকুরির ইন্টারভিউ তার আর দেওয়া হলো না। তার আগেই সে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। নিহত সুজনরা ৪ ভাই ও ২ বোন। তার ৩ ভাই প্রবাসে থাকে। পরিবারের ছোট হিসেবে সে বাড়িতেই থাকতো। মঙ্গলবার বাদ এশা নিহতের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত রুবেলরা ৩ ভাই ও ৪ বোন। রুবেল বন্ধুদের নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে যাচ্ছিল। ট্রেন দুর্ঘটনায় সে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং অপর এক বন্ধু গুরুতর আহত হয়। অপর দুই বন্ধু সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রজব আলী। খবর পেয়ে নিহত রুবেলের ভাইয়েরা সকাল ১১টায় লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে। দুপুর ২টায় নিহতের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। শোক জানানে নিহত রুবেলের বাড়িতে যান চুনারুঘাটের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা ও ইউপি চেয়ারম্যান রজব আলী।
অপরদিকে নিহত পিয়ারা বেগমের বাড়ি আহমদাবাদ ইউনিয়নের ছয়শ্রী গ্রামে। তিনি আঃ ছালামের স্ত্রী। তার ৪ ছেলে মেয়ে রয়েছে। দুর্ঘটনার রাতে উদয়ন ট্রেন যোগে তিনি তার পিতার বাড়ি নোয়াখালী যাচ্ছিলেন। বাড়িতে তিনি মারা যাওয়ার খবর আসলে শোকের মাতম শুরু হয়।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানিয়েছেন, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।