স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে দক্ষিণ শ্যামলী এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তার বাসার ভাড়াটিয়ার মিনি পতিতালয় থেকে ভিকটিম সুমা আক্তারের দেখানো মতে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নির্যাতিতা মেয়েটিকে সাথে নিয়ে মিনি পতিতালয় থেকে ১ কার্টুন কনডম ও বিভিন্ন ধরনের যৌন উত্তেজক ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী জব্দ করেন। এদিকে, পুলিশ উমেদনগরের আরজু মিয়ার পুত্র এই চক্রের গডফাদার জুয়েল (৩৫) ও সুমার প্রতারক প্রেমিক শ্যামলী এলাকার মোশাহিদ আলীর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান রাসেলকে খুঁজছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে হবিগঞ্জ সদর থানার পুলিশ ওই বাসা থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মক্ষীরাণী সেজিয়াসহ ২ খদ্দেরকে আটক করে। এ সময় যুবতী সুমাকে উদ্ধার করা হয়। সুমা জানায় তাকে রাসেল প্রেমের ফাঁদে ফেলে মক্ষীরাণী সেজিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেজিয়া তাকে ইনজেকশন পুশ করে যৌন কাজে বাধ্য করত। এ ঘটনায় শায়েস্তানগর মোকামবাড়ি এলাকার লাল মিয়া স্ত্রী সুমার মা বাদী হয়ে জুয়েল, রাসেল ও সেজিয়াকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সেজিয়া কারাগারে রয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়- সদর উপজেলার পইল গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী জাহানারা আক্তার তার কন্যা সুমাকে নিয়ে শায়েস্তানগর মোকামবাড়ি এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। উমেদনগরের রাসেল ওরফে রুমান মিয়া নামে এক যুবকের সাথে সুমার মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। কৌশলে রাসেল সুমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। সম্প্রতি বেড়ানোর কথা বলে রাসেল সুমাকে দক্ষিণ শ্যামলী এলাকায় সেজিয়া আক্তার সাদিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। সাদিয়া তাকে ব্ল্যাকমেইল, বিদেশে পাচারের ভয়ভীতি ও বিভিন্ন ইনজেকশন পুশ করে খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করতে বাধ্য করে। এক মাস ধরে মক্ষিরাণীর শত নির্যাতন সহ্য করে সুমা তার কথামতো চলে আসছিল। গত শনিবার দুপুরে সুমার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ও পৌর কাউন্সিলর শেখ নুর হোসেন ওই বাসা ঘেরাও করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙ্গে ঘর থেকে সুমাসহ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে উমেদনগরের জুয়েল মিয়া ও সাদিয়া পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাদিয়াকে গ্রেফতার করে। কিন্তু জুয়েল ও রাসেলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় আটক সাদিয়াকে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। উক্ত মামলার এসআই জানান, সাদিয়াকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার এই আস্তানার মূল রহস্য উদঘাটন হবে।