দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৯ প্রার্থী

এসএম সুরুজ আলী ॥ আজ সোমবার হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ও মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে ২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে দেবপাড়া ইউনিয়নে ৫ জন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহিত চৌধুরী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট জালাল আহমেদ (ঘোড়া), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান হাজী আ.খ.ম ফখরুল ইসলাম (আনারস), স্বতন্ত্র প্রার্থী ফখরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়ার নাদির সুমন (চশমা)। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৮ হাজার ৩০৫ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৯টি। নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ মোজাহিদ বিন ইসলাম (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম জাবেদ (ঘোড়া), স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউজ্জামান (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আদম খাঁ (মোটর সাইকেল)। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ২১ হাজার ২৬৭ জন। পুরুষ ১০ হাজার ৪শ’ ৪৯ জন ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৭শ’ ৭২ জন। এ ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১০টি। নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে। ২টি ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের মোবাইল টিম ও বিজিবি আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবে। ২টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার। ২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিক বরাদ্দের পর পরই প্রার্থীরা জোড়েসুরে প্রচারণায় নামেন। প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ২টি ইউনিয়নের ১৮টি ওয়ার্ড এলাকা। কে হবেন উপ-নির্বাচনে বিজয়ী এ নিয়েও চলে চায়ের স্টলগুলোতে আলোচনা। তবে আজ সোমবার সন্ধ্যায় জানা যাবে কোন ইউনিয়নের কে হয়েছেন বিজয়ী।
গতকাল রবিবার বিকেলে কেন্দ্রগুলোতে ভোট গ্রহনের জন্য ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে রাত কাটাবেন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই, কনস্টেবল, আনসার সদস্যরা।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মনিরউজ্জামান জানান, প্রতিক বরাদ্দ পাওয়ার পর পরই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচারণায় নামে। শনিবার রাতে প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ভোট ব্যাক্সসহ নির্বাচনের ভোট গ্রহনের সকল সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। তিনি জানান, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষে প্রতি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ ও আনছার ভিডিপি সদস্যসহ ২২ জন করে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবে। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও নেয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ইউনিয়নের ১০টি ভোট কেন্দ্রে গতকাল রবিবার বিকেলেই ভোট গ্রহনের সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য প্রতি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ, আনসার সদস্যসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও ৬ জন নির্বার্হী ম্যাজিস্ট্রেট, ১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও পুলিশের ৬টি মোবাইল টিম সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবে। সকলের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, ২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন ও কয়েকটি ওয়ার্ডের মেম্বার পদে উপ-নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোথায়ও কোন কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পেলেই পুলিশ তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন- অন্যান্য নির্বাচনের ন্যায় এ নির্বাচনটিও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ জাবেদ (জাবিদ আলী) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অপর দিকে ১৮ জুলাই নেয়াপাড়া ইউনিয়নের ৭ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাছিম মোঃ আলমগীর মারা যান। এ কারণে ২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।