কালাাডোবা নৌকাবাইচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ করে নৌকা বাইচের আয়োজন করে পার্শ্ববর্তী উমেদনগর টমটম মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার বিকাল ৩টায় এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলে ওই রাস্তা দিয়ে সবধরণের যানবাহন চলাচল রাত ৭টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। কার্যত পুরো রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থাই বন্ধ হয়ে পড়ে। নৌকা বাইচের কারণে আতুকুড়া বাজার থেকে উমেদনগরের দেওয়ান মাহবুব রাজার মাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কোনো দিকে যেতে না পেরে উভয়দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে যানবাহনে থাকা যাত্রীগণ গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালারডোবায় নৌকা বাইচ শুরু হওয়ার আগ থেকেই রাস্তার উভয়পাশে সব ধরণের যানবাহন দাঁড় করিয়ে যে যার ইচ্ছেমতো সমস্যার সৃষ্টি করেছেন। রাস্তার দুই পাশে ভিড় জমায় হাজার হাজার মানুষ। এমতাবস্থায় ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা পড়েন চরম বিপাকে। বিশেষ করে যানবাহনে থাকা রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রশাসনের কোনো অনুমতি না নিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ করে এইভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার কোনো মানে ই হয় না বলে ক্ষোভ জানান যাত্রীরা। তারা আরো জানান, গতকাল যেহেতু শুক্রবার ছিল ওই দিন বিভিন্ন উপজেলা এমনকি গ্রাম থেকে রোগীরা উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা শহরে যান। বিকেলে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফেরার সময় তারা উক্ত জায়গায় নৌকা বাইচ হওয়ার ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ির মধ্যে বসে থেকে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে এসময় যানজটের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্সও আটকে ছিল। ডেলিভারী রোগীসহ সাধারণ রোগীদের অবস্থা ছিল আলো শোচনীয়। নৌকা বাইচ আয়োজকদের প্রতি বিরুপ মন্তব্যসহ ক্ষোভ ঝেড়েছেন যানজটে আটকেপড়া যাত্রীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বেশ ঝঁড় উঠেছে। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান তুহিন জানান, এমন নজির কোথাও দেখিনি, এভাবে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দিয়ে নৌকাবাইচ, মানুষকে আনন্দের চেয়ে কষ্টই বেশী দিয়েছে। আয়োজক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ছিল এ আয়োজনে।
জামে আটকেপড়া যাত্রী প্রদীপ সূত্রধর বলেন, আমার সাথে একজন রোগী ছিলেন। জামে আটকে পড়ে এমন অবস্থা হয়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে নৌকাবাইচ খুবই দু:খজনক, আয়োজক কর্তৃপক্ষের আরো দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার জানান, নৌকাবাইচে প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছিল না। আমরা এই বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। সড়ক বন্ধ করে যে যার মতো কাজ করবে তা হতে দেয়া হবে না।
জনদুর্ভোগের বিষয়টি বানিয়াচং থানার ওসি রাশেদ মোবারককে অবহিত করা হলে তিনি দ্রুত পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে নিজেই যানজট মুক্ত করার কাজে লেগে যান। পরে হবিগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ, হবিগঞ্জ সদর থানার সদস্যরাও এসে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চালান।