প্রাণ কোম্পানীর কিশোরী শ্রমিককে ধর্ষণের ঘটনায় দুই ধর্ষকের আদালতে স্বীকারোক্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের কামড়াপুর থেকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে প্রাণ কোম্পানীর এক কিশোরী শ্রমিককে ধর্ষণের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে আটক সোহেল রানা (২২)। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার নিজের বাড়ি থেকে সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়। সে উপজেলার আশেঢ়া গ্রামের বায়জীদ মহুরীর পুত্র। শুক্রবার বিকেলে সোহেল রানাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে ধর্ষণের ঘটনার পুরো বর্ণনা দেয়। সেই সাথে ধর্ষণে যারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করে সোহেল রানা। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উভয় ধর্ষকের স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- দুজন মিলেই মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। তারা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এবং আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, সিএনজি অটোরিকশা চালক আব্দুর রশিদ মেয়েটিকে কামড়াপুর এলাকা থেকে প্রাণ কোম্পানীতে পৌছে দেয়ার কথা বলে তার সিএনজি অটোরিকশায় তুলে। মেয়েটিকে গাড়িতে একা পেয়ে রশিদ তাকে ধর্ষণের ফন্দি আটে। সে চিন্তা করে বন্ধু সোহেল রানাকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করবে। এ চিন্তা থেকে সে প্রথমে ধুলিয়াখাল বাইপাস সড়কে দিয়ে না গিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে হবিগঞ্জ-লাখাই সড়ক দিয়ে আশেঢ়া এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এ সময় মেয়েটি ভুল রাস্তায় যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে চালক রশিদ জানায়, ফাঁড়ি পথে সহজে প্রাণ কোম্পানীতে নিয়ে যাবে। এর মধ্যে আশেঢ়া এলাকায় তার বন্ধু সোহেল রানাকে মোবাইল ফোনে মেয়েটির কথা জানায় এবং রাস্তায় থাকার জন্য বলে। আশেঢ়া গিয়ে সোহেল রানাকে ধর্ষণের দাওয়াত দিয়ে গাড়িতে উঠায় সিএনজি চালক আব্দুর রশিদ। এরপর রশিদ সিএনজি অটোরিকশাটিকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে তারা দুই বন্ধু মিলে মেয়েটিকে পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওইদিন রাত ১১টায় পুলিশ টহলকালে কিশোরীর চিৎকার শুনে সিএনজি অটোরিকশাসহ চালক আব্দুর রশিদকে আটক এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ প্রহরায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, শুক্রবার মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। অভিযুক্ত দু’জনই আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মামলাটির মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের বাল্লা গাজীপুর গ্রামের তনজু মিয়ার সপ্তদর্শী কিশোরী কন্যা অলিপুরে প্রাণ কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি সে সুস্থ হয়ে কাজে যোগদানের প্রস্তুতি নেয়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরী বাড়ি থেকে হবিগঞ্জ শহরে এসে কামড়াপুর ব্রিজের নিকট অলিপুর যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিকশা খোঁজে। এক পর্যায়ে সদর উপজেলার নিতাইরচক গ্রামের আব্দুস সামাদের পুত্র সিএনজি চালক আব্দুর রশিদের সাথে তার দেখা হয়। তখন ওই কিশোরী ভাড়া ঠিক করে অলিপুরে যাওয়ার জন্য সিএনজিতে উঠে। উঠার পর লম্পট চালক ও তার সহযোগী সোহেল রানা পথে নির্জন স্থানে ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ওইদিন রাত ১১টায় পুলিশ টহলকালে কিশোরীর চিৎকার শুনে সিএনজি অটোরিকশাসহ আব্দুর রশিদকে আটক এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ প্রহরায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণে জড়িত দুজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উভয়েই আদালতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।