স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়নে যে দাবিগুলো রয়েছে সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। হবিগঞ্জের উন্নয়নে যে দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়েছে সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের ব্যবধানে আমরা সব দাবি পূরণ করবো। হবিগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি এসব কথা বলেন। তিনি শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ শোকসভায় বক্তব্য রাখছিলেন। মন্ত্রী হবিগঞ্জের ড্রেনেজ সমস্যা নিরসনে নেতৃবৃন্দ ও বিশেষজ্ঞ মিলে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার পরামর্শ দেন যাতে করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। হবিগঞ্জ পৌরসভার ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানসহ শিশু পার্ক নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়নেও পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বস্থ করেন।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে বর্জ্যকে একটি কার্যকরী ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন যত্রতত্র বর্জ্য ফেলে খাল বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কার্যকরী ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে বর্জ্য সম্পদ হিসেবে দেখা দিবে। তিনি বলেন, হবিগঞ্জের নির্মাণাধীন পানি শোধনাগারটি বাস্তবায়ন হলে পানি সরবরাহের সমস্যা নিরসন হবে। তিনি বলেন ২০৩০ সালের মধ্যে সারা বাংলাদেশে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
মন্ত্রী পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলেন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পৌরসভার আয় বাড়াতে হবে। কর আদায়ে নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণে দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার শতভাগ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় ৫শ’ ডলার হতে ২ হাজার ডলারের উপরে গিয়েছে। আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে দারিদ্র থাকবে না, অন্যায়-অবিচার থাকবে না। সন্ত্রাস থাকবে না। সব মানুষ শিক্ষা গ্রহন করবে, উন্নত জীবন যাপন করবে।
হবিগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত শোকসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ-লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। তিনি হবিগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা, বৃন্দাবন কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালুসহ বর্তমান সরকারের সময়ে নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান মিজানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এমপি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ খান, এমপি গাজী মোঃ শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মিজান বলেন হবিগঞ্জ পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজের চাহিদা রয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এ সকল উন্নয়ন কাজকে এগিয়ে নিতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। সভা উপস্থাপনা করেন পৌরকাউন্সিলর মোঃ জাহির উদ্দিন। হবিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন দীলিপ দাস, মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, গৌতম কুমার রায়, শেখ নূর হোসেন, মোঃ আব্দুল আউয়াল মজনু, মোঃ আলমগীর, পিয়ারা বেগম, খালেদা জুয়েল ও অর্পনা পাল। এছাড়াও হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তাবৃন্দ ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোকসভায় উপস্থিত ছিলেন। হবিগঞ্জ পৌরপরিষদের পক্ষ হতে মন্ত্রীর হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেয়া হয়। এর আগে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবিগঞ্জ পৌরসভার কিচেন মার্কেট উদ্বোধন করেন। এছাড়া তিনি শ্মশানঘাট রোডে নির্মাণাধীন পৌর পানি শোধনাগার প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
কিচেন মার্কেট উদ্বোধনকালে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com