এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তিতখাই-চান্দপুর ভায়া মির্জাপুর সড়কটি সংস্কারের অভাবে দুটি উপজেলার কয়েকটি গ্রামবাসীকে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। তবে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের আশ^াস দিয়েছেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ওবায়দুল বাশার। জেলা সদর থেকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া ইউনিয়নের চান্দপুর, গজারিয়াকান্দি, ধনার আব্দা, বানিয়াচং উপজেলার শাহপুর, রতনপুরসহ দূরত্ব সাড়ে ৩ থেকে ৪কিলোমিটার। কিন্তু উল্লেখিত রাস্তারটির মির্জাপুর থেকে চান্দপুর এলাকা পর্যন্ত সংস্কার না করায় ওই এলাকাবাসীকে বর্ষা মৌসুমে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত এপ্রিল মাসে রাস্তাটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। এরপর রাস্তাটির দেড় কিলোমিটার কার্পেটিং করার কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদার রাস্তায় ইটের কংক্রিট ফেলেন। কিন্তু ২ মাস ধরে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও রাস্তার চৌড়ারখাড়া এলাকার খালের ব্রীজটি প্রায় ১০ বছর পূর্বে ভেঙ্গে গেলেও সংস্কারের কোন প্রকার উদ্যোগ না নেয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে এলাকার চলাচলের অস্থায়ী সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। যার ফলে এলাকাবাসী সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে পারেন না। এলাকাবাসীকে বাধ্য হয়ে খোয়াই নদী নিয়ে নৌকাযোগে হবিগঞ্জে আসা যাওয়া করতে হয়। যদিও শহরের চৌধুরী বাজার নতুন খোয়াই ব্রীজ এলাকার নুরুল হেরা মসজিদের সামন থেকে খোয়াই নদীর বাধ দিয়ে শাহপুর বাজার পর্যন্ত টমটম (ইজিবাইক) চলাচল করে। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই টমটম চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন এলাকার সাধারণ যাত্রীসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় এলাকাবাসী রাস্তা সংস্কার ও চৌরারখাড়ায় খালে ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গজারিয়াকান্দি-ধনারআব্দা গ্রামের ব্যবসায়ী রাসেল মোড়ল জানান, প্রতি বছর খোয়াই নদীর বাধ ভেঙ্গে রাস্তাটি বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে যায়। পরিকল্পিতভাবে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। লুকড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মজনু মিয়া জানান, হবিগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার দূরত্ব আমাদের এলাকা। আমাদের এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য তিতখাই-চান্দপুর ভায়া মির্জাপুর সড়কটি প্রায় ২৫ বছর পূর্বে নির্মাণ করা হয়। রাস্তার মধ্য স্থান চৌড়ারখাড়ায় একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রায় ১০ বছর পূর্বে খোয়াই নদীর বাধ ভেঙ্গে পানি গজারিয়াকন্দি ও মির্জাপুরের হাওরে প্রবেশ করে। হাওরে পানি প্রবেশকালে ব্রীজটি দুর্বল হয়ে ভেঙ্গে যায়। এরপর ব্রীজটি নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেননি। এরপর প্রতি বছর খোয়াই নদীর বাধ ভেঙ্গে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে যায়। শুকনো মৌসুমে রাস্তাটি দিয়ে টমটম দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মওসুমে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়। জনদুর্ভোগ লাঘবের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন। লুকড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আবু তাহের জানান, এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরের প্রচেষ্টায় এ বছরের এপ্রিল মাসে রাস্তার দেড় কিলোমিটার কাপেটিং (পিচ) করার প্রকল্প অনুমোদন হয়। পরবর্তীতে এমপি আবু জাহির ওই প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন। কিন্তু রাস্তায় ইটের কংক্রিট ফেলার পরই ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দেন। প্রায় ২ মাস ধরে কার্পেটিং কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন রাস্তার কাপেটিং কাজ ও যে স্থানগুলো ভেঙ্গে গেছে সেগুলো মাটি ভরাটসহ চৌরারখাড়ায় ব্রীজ নির্মিত হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে। এলাকার দুর্ভোগ লাগবের জন্য রাস্তাটি সংস্কার ও ব্রীজ নির্মাণের জন্য কর্তপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
একটি সূত্র জানায়, অনেকটা অনিয়ম ও অপরিকল্পিত ভাবেই ঠিকাদার রাস্তায় কংক্রিট ফেলেছেন। সঠিকভাবে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করার জন্য এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকৌশলী ওবায়দুল বাশার জানান, ঠিকাদারকে রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার জানিয়েছেন বৃষ্টি কমে গেলেই রাস্তার কার্পেটিং কাজ শুরু করবেন। অপরদিকে রাস্তারটি চৌড়ারখাড়া খালে ব্রীজ নির্মাণের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন হলেই ব্রীজের কাজ শুরু হবে।