পুলিশের অভিযানে এক ঘন্টার মধ্যে শিশু উদ্ধার ॥ সেই ‘মা’ গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল থেকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে ৪ দিনের নবজাতক শিশুকে চুরি করে নেয়ার এক ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই সাথে চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মহিলা হলেন- হবিগঞ্জ শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকার রিপন আহমেদের স্ত্রী ইসরাত আরা লোপা আক্তার।
চুনারুঘাট উপজেলার জোয়ার লালচান্দ চা বাগানের মোর্শেদ কামালের স্ত্রী নবজাতকের মা ফাতেমা বেগম জানান, ১৮ আগস্ট সকালে প্রসুতি ব্যাথা নিয়ে তিনি গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি হন। এসময় এক নার্স বলে ‘স্বাভাবিক ডেলিভারীতে ঝুঁকি আছে। কিছু টাকা খরচ করতে পারলে তোমাকে সিজার করব’। তার কথামতো ওই নার্সকে ৩ হাজার টাকা দিলে ওইদিন দুপুরে ফাতেমাকে হাসপাতালে সিজার করা হয়। সিজারে ফাতেমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে লোপা আক্তার ফাতেমার আত্মীয় পরিচয়ে নবজাতকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে তাকে নিয়ে সটকে পড়েন। পরে অনেকক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও বাচ্চাটিকে নিয়ে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজি শুরু করেন ফাতেমা। না পেয়ে তিনি আন্দাজ করতে পারেন তার বাচ্চাকে চুরি করা হয়েছে। তারপর হাসপাতালে শুরু হয় হট্টগোল। শত-শত মানুষ হাসপাতালে ছুটে আসেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউর রহমান, এসআই অমিতাভ তালুকদার ও আবু নাঈমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতালের সামনে থাকা টমটম চালকের সহায়তায় শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকায় রিপন আহমেদের বাসায় অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রী ইসরাত আরা লোপা আক্তারের কাছ থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে তার মা’র জিম্মায় দেয় পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানান, অভিযুক্ত লোপা আক্তারের দীর্ঘদিন আগে রিপনের সাথে বিয়ে হলেও একাধিকবার তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। বর্তমানেও সে ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা। ডাক্তারী পরীক্ষায় সে জানতে পারে বাচ্চার অবস্থা ভাল না। এ অবস্থায় স্বামী ও তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এ কারণে বাচ্চাকে চুরি করে বাসায় প্রচার করে তার বাচ্চা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, নবজাতককে উদ্ধার করে তার মা’র জিম্মায় দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।