স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গ উপজেলার বড়ইউড়ি ইউনিয়নের হলদারপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন হত্যা মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে নারাজীর আবেদনের শুনানির তারিখ পেছানো হয়েছে। মঙ্গলবার হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর আক্তারের আদালতে মামলার আসামী বড়ইউড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারাজীর আবেদনের নির্ধারিত ধার্য্য তারিখ ছিল। কিন্তু আদালতে সমস্যা থাকার কারণে নারাজীর আবেদনের শুনানির তারিখ পেছানো হয়েছে। মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে নারাজীর আবেদনের শুনানির পরিবর্তী তারিখ আগামী ১৫ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন তালুকদার।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর হলদারপুর গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শেখরুল ইসলাম বিদেশে চলে যাওয়ায় তার কার্ড নিয়ে সরকারি সহযোগিতার চাউল ও নগদ টাকা আনতে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের কাছে যান তার ভাই সিরাজ মিয়া। ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান এ সময় সিরাজ মিয়াকে জানান, যার কার্ড সে এসে চাউল ও টাকা নিতে হবে। এ প্রেক্ষিতে সিরাজ মিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে অনুরোধ করে বলেন, শেখরুল মিয়া বিদেশে চলে গেছেন। তার ভাই হিসেবে তিনি চাউল নিতে এসেছেন। এ নিয়ে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত ইসলাম উদ্দিনসহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসলাম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ইসলাম উদ্দিনের লাশের ময়না তদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় নিহত ইসলাম উদ্দিনের বড় ভাই নুর উদ্দিন বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে বানিয়াচঙ্গ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হক তদন্ত শেষে গত ২ মার্চ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বাদী অভিযোগ করেন রহস্যজনক কারণে মামলার চার্জশীট থেকে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, তার ভাই হাফিজুর রহমান, ভাতিজা মিজানুর রহমান ও চাচাত ভাই ফারুক মিয়ার নাম বাদ দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ প্রেক্ষিতে মামলার বাদী নুর উদ্দিন ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ৪ আসামীকে চার্জশীটে অন্তর্ভূক্ত করার আবেদন জানিয়ে দাখিলকৃত চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজীর আবেদন করেন। এদিকে গত ১৭ মার্চ মামলার জখমী সাক্ষী কামাল মিয়ার উপর হামলা চালায় আসামীরা। হামলায় আহত কামাল মিয়া হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
কামাল মিয়া অভিযোগ করেন, ওইদিন সকালে ট্রাক্টর নিয়ে কালাইনজুড়া, কদুপুর গ্রামে মাটি কাটার কাজে যাচ্ছিলেন। মামলার অন্যতম আসামী ও ইসলাম উদ্দিনের খুনের মামলার আসামী ফারুক মিয়ার বাড়ির সামনে গেলে ফারুক মিয়া, মুকিত মিয়া, ফরিদ মিয়া, জুনেদ মিয়া, ফজলু মিয়া, রাহেল মিয়া, সুজন মিয়া, জুয়েল, সাইফুল, জাবেদ, রুবেল গং কামাল মিয়া ও তার হেলপার ওয়াসিক মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে কামাল মিয়া ও তার হেলপার আহত হন। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় কামাল মিয়া মামলা দায়ের করেছেন।