স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চুনারুঘাট উপজেলার বালু সিন্ডিকেট। খোয়াই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি এবার ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বালু মজুদের জন্য স্থানীয় এক নিরীহ ব্যক্তির জায়গা জবর দখলেরও। স্থানীয়দের অভিযোগ, দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠা ওই বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কিছু বললে নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। জেলা প্রশাসক বলেছেন- বিষয়টি তিনি অবগত। শিগগিরই তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, চলতি বছর চুনারুঘাটের খোয়াই নদীর দুটি বালুমহাল ইজারা নিয়েছে সেলিম আহমেদ। প্রথম অবস্থায় সেলিম আহমেদ ও তার সহযোগিরা ইজারার টাকা পরিশোধ না করেই বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে শুরু করে। এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ হলে সেলিম সিন্ডিকেটের হামলার শিকার হয় ৩ টেলিভিশন সাংবাদিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ওই চক্রটি উপজেলার বনগাঁও এবং আশ্রবপুরসহ খোয়াই নদীর বিভিন্ন এলাকায় লিজবহির্ভূত জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। খোয়াই নদী থেকে বালু উত্তোলনের পর খোরশেদ আলম নামে এক নিরীহ ব্যক্তির জায়গায় রাখা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, আশ্রবপুর এলাকায় ওই গ্রামের খোরশেদ আলমের ৫ একর জায়গা দখল করে নিয়ে তারা বালু ব্যবসা করছে। এমনকি তার জায়গার অনেকগুলো গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। তাদের হুমকি-ধামকিতে পরিবারসহ গ্রামছাড়া খোরশেদ আলম। এ ব্যাপারে খোরশেদ আলম আইনের সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি গত ২৩ আগস্ট হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
খোরশেদ আলম বলেন- বালু সেলিম সিন্ডিকেটটি আমার জায়গা দখল করে বালু ব্যবসা করছে। বালু পরিবহণের জন্য আমার জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। আমি অনেক অনুরোধ করেছি আমার জায়গাটি আমাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। আমার কোন অনুরোধই তারা শোনেনি। এমনকি ওই সিন্ডিকেটটি আমার জায়গার অনেকগুলো গাছ কেটে নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমি আইনের আশ্রয় নিলে তারা বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তাদের অত্যাচারে আমি ও আমার পরিবার এখন গ্রামছাড়া।
তিনি আরও বলেন, তারা শোকের মাসে অর্থাৎ ১৯ আগস্ট আমার জায়গার উপর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল পালের জন্মদিনের কেক কাটে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রানীগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান রিপন ও সেলিমসহ সিন্ডিকেটের সদস্যরা। আমার জায়গার উপর দাড়িয়ে তারা জন্মদিনের কেক কেটে কি ম্যাসেজ দিতে চায়। এর মাধ্যমে তারা আমাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে মন্ত্রী ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, এর আগেও খোরশেদ আলমের জায়গাটি একবার উদ্ধার করে দিয়েছি। এখন যদি আবারও বালু ব্যবসায়ীরা দখল করে থাকে, তাহলে উদ্ধার করার জন্য উপজেলা প্রশাসন তাকে সহযোগিতা করবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ বলেন- কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।