স্টাফ রিপোর্টার ॥ কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে অভিনব কায়দায় নৌ-ডাকাতির ঘটনায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাদেরকে আজমিরীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ইঞ্জিত চালিত নৌকা, একটি মোবাইল, রামদা, চাকু, রশি, নগদ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলো- আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (৩৭), একই এলাকার আজিদ মিয়ার ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক (২২) ও মধু মিয়ার ছেলে কবির হোসেন ওরফে কোব্বাত (৩২)। বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আল আমিন হোসাইন।
তিনি জানান, গত ১১ আগস্ট ৩ জন হাঁস পাইকার কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওরে হাঁস কিনতে আসে। হাওরের অলওয়েদার রোডের মিঠামইন জিরো পয়েন্টে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির (সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য) সাথে হাঁস পাইকারদের কথা হয়। ওই ব্যক্তি (সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য) হাঁস বিক্রির কথা বলে তাদেরকে মিঠামইনের ঢাকী ব্রিজে নিয়ে যায়। সেখানে ব্রিজের নিচে থাকা একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় উঠিয়ে তাদেরকে হাওরের পূর্ব দিকে নিয়ে যেতে থাকে। ১০ মিনিটের মতো কিছুদূর যাওয়ার পর নৌকার ছৈয়ের ভিতরে পাটাতনের নিচে লুকিয়ে থাকা ৫/৬ জন ডাকাত পাটাতন থেকে বেরিয়ে এসে তাদের হাতে থাকা রামদা, ছুরি, চাকু, চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নৌকায় থাকা রশি ও গামছা দিয়ে তাদের হাত পা মুখ বেঁধে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মেরে হাঁস কেনার জন্য পাইকারদের সাথে থাকা ১ লাখ ৭ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা হাঁস পাইকারদেরকে খুন জখমের ভয় দেখিয়ে তাদের আত্মীয় স্বজনদের পাঠানো ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিভিন্ন বিকাশ নাম্বারে সেন্ড মানি/ক্যাশ আউট করে নেয়। ডাকাতদল মালামালসহ তাদের কাছ থেকে ২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা লুন্ঠন করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ওইদিন রাত ৮ টায় হাঁস পাইকারদের হাত পায়ের বাঁধন খুলে মিঠামইন উপজেলার কাঠখাল ইউনিয়নের ছত্রিশ নামক জায়গায় হাওরের পানির মধ্যে ফেলে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় মিঠামইন থানায় ২৩ আগস্ট মামলা দায়ের করা হলে অভিযানে নামে পুলিশ। সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। প্রেস ব্রিফিংকালে অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা, মিঠামইন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।