বাহুবলে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২০টি গ্রাম প্লাবিত

মনিরুল ইসলাম শামিম, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবলে টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে করাঙ্গী নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। নদীতে পানির স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাত জেগে মানুষ ঝুকিপূর্ণ বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। উপজেলার অন্ততঃ ২০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করায় মৌসুমী ফসলসহ বিভিন্ন ফসলাদির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার দিনভর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। এতে রাস্তাঘাটের বেহাল দশা হয়েছে। উপজেলার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে বয়ে যাওয়া করাঙ্গী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। নদীর একপাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় অন্ততঃ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদীর অপরপাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধেরও বিভিন্ন স্থান রয়েছে হুমকির মুখে। যে কোন সময় একাধিক ভাঙন সৃষ্টি হয়ে জনবতিসহ ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের বড়গাঁও, শফিয়াবাদ, সাহানগর, গাংপাড়, রশিদপুর, পূর্ব ভাদেশ্বর, কসবাকরিমপুর, ডুমগাও, নোয়াগাঁও, পুরান মৌড়ি, জয়নাবাদ, বাহুবল, উত্তরসুর, কবিরপুর, মানিকা প্রভৃতি গ্রামের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও নদীর অপরপাড়ের নিজগাঁও, পশ্চিম ভাদেশ্বর, ইসলামপুর ও দশকাহনিয়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধা ভাঙনের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ওইসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ভেঙে জনবতিসহ ফসলাদি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, উপজেলা সদরস্থ দীননাথ ইনস্টিটিউশন সাতকাপন সরকারি হাই স্কুলে করাঙ্গী নদীতে সৃষ্ট বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। স্কুলটির অধিকাংশ ক্লাশরুমে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসগ্রহণ ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয় সংলগ্ন করাঙ্গী নদীর ব্রীজের একপাশের মাটি ধ্বসে পড়ায় যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রীজটি দিয়েই প্রতিদিন শত শত ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করছে।
অপরদিকে, সোমবার দিনভর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হকসহ প্রশাসনের লোকজন বিভিন্ন স্থানে করাঙ্গী নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ, বন্যা কবলিত এলাকা ও রাস্তাঘাট পরিদর্শন করেছেন।