হবিগঞ্জের মুখ রিপোর্ট ॥ কালের আবর্তে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের ধারক-বাহক অনেক কিছুই আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পৌষ সংক্রান্তির শীত উত্তাপের স্বাক্ষর ‘মেরামেরি’ হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি আমাদের আবহমান বাংলার এক লোক সংস্কৃতি। তবে ঐতিহ্যের অনেক কিছুই কালের গর্ভে হারাতে বসেছে। যদিও এখনো ইট পাথরের শহুরে জীবনে নিভু নিভু প্রায় টিকে আছে পৌষসংক্রান্তির ‘মেরামেরি’। মেরামেরির অস্থায়ী এ ঘরটিকে কোন কোন স্থানে ‘ভেড়া ঘর’ বলেও অভিহিত করা হয়। এটি তৈরি করা হয় পৌষ সংক্রান্তির রাতে। খড়কুটো দিয়ে তৈরি ঘরটির মাঝে ছোট-বড় সবাই মিলে গান-বাজনা আমোদপ্রমোদে মত্ত হন। চলে সাধ্য অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া। পরের দিন সকালে ওঠে স্নান সেরে ঘরটি আগুনে জ্বালিয়ে দিয়ে এর চারপাশ ঘিরে পৌষসংক্রান্তির পিঠা খাওয়া মেরামেরির একটি প্রাচীন রীতি।
এ ব্যাপারে শহরের পুরানমুন্সেফি এলাকার বাসিন্দা রতন দাশ বলেন, পৌষমাস এলেই কয়েকদিন আগ থেকে পাড়ার যুবক ও ছাত্ররা মিলে মেরামেরির ঘর বা ভেড়া ঘর বানানোর প্রস্তুতি চলত। খড়-বাঁশ বেত দিয়ে তৈরি করে হতো সেই ঘরটি। সংক্রান্তির আগের দিন ঘর তৈরি করা হতো। রাতে ঘরে আমরা নিজেরা নিজেদের মতো করে রান্না-বান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতাম। কিন্তু সভ্যতার ক্রমবিকাশে শহুরে জীবনে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের গ্রাম বাংলার এই লোকজ ঐতিহ্য।