ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট বললেন, কারখানায় অনুমোদনবিহীন ভেজাল পণ্য তৈরী করা হচ্ছিল ॥ জব্দকৃত ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের পণ্য আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে
রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং থেকে ॥ বানিয়াচংয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা ও পিতা পুত্রকে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় বানিয়াচং নতুন বাজারে অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার আইনের বিভিন্ন ধারায় এ জরিমানা ও কারাদন্ড প্রদান করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আমিরুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে বানিয়াচং নতুন বাজারের অরুন রায়ের মুদির দোকানকে পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা এবং ১৪টি বার্মিজ আচারের প্যাকেটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৭/৫১ ধারায় দুই হাজার টাকা এবং ৯টি মুড়ির প্যাকেট ও ৫০টি বার্মিজ আচারের প্যাকেটে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় একই ধারায় রণধীর মোদকের মুদির দোকানকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে কারখানায় উৎপাদিত পণ্যে মোড়ক ব্যবহার না করা, ভেজাল পণ্য তৈরী, খাদ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ অস্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়ায় উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও নকল পণ্য প্রস্তুত করায় বানিয়াচং ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়নের সাগরদীঘির দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত কারখানা মালিক নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার সেন্টু মিয়া ও তার পুত্র কাওছার মিয়াকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৭/৪২/৪৩/৫০/ও ৫২ ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন বানিয়াচং উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান খান।
এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান খান জানান- ওই কারখানায় অনুমোদনবিহীন অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে এসব ভেজাল পণ্য তৈরী করা হচ্ছিল। হাইজেনিক জিনিস বলতে কোনো কিছুই এখানে নেই। তারপর পণ্যের প্যাকেটে উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ, এমনকি মূল্য পর্যন্ত দেয়া নেই। আবার ভেজাল খাদ্য উৎপাদন করে অন্যান্য কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে বাজারজাত করছে তারা। এসব খেলে শিশুরা এবং বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়বে তাৎক্ষনিক। যে খাবে সেই অসুস্থ হয়ে পড়বে। এমতাবস্থায় আমরা ভোক্তা অধিকার ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় ওই কারখানার মালিক ও তার পুত্রকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছি। তবে তাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আর্থিক কোনো জরিমানা করা হয়নি। শুধুমাত্র কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। পরে এই কারাখানা থেকে জব্দকৃত মুড়ি, আচার, চিপস, মটরশুটি, পলিথিনসহ নানা পণ্য উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী খালি ময়দানে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে। নষ্ট করা পণ্যের আনুমানিক মূল্য ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালতকে সহায়তা করেন বানিয়াচং থানার এসআই আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ।