
স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে সহযোগীদের নিয়ে শ্যালিকাকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে লম্পট ঘাতক দুলাভাইসহ ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিতরা হলেন নবীগঞ্জ উপজেলার বাঁশডর গ্রামের বাসিন্দা মামলার বাদীনির স্বামী এবং নিহতের দুলাভাই সাইফুল ইসলাম (৩২), নবীগঞ্জ পৌরসভার হরিপুর এলাকার মৃত আব্দুন নূরের ছেলে আব্দুল মন্নাফ (৫২), একই এলাকার বজলা মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩৫) ও আনমনু গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে রাজু আহমেদ (৪৫)। রায় ঘোষণাকালে দন্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম জানান, নবীগঞ্জ পৌরসভার হরিপুর এলাকার বাসিন্দা আরব আলীর কন্যা রৌশনা খাতুনকে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করতে থাকে সাইফুল ইসলাম। এক পর্যায়ে তার শ্যালিকা স্থানীয় স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেহা বেগমের প্রতি কুনজর পড়ে সাইফুলের। ২০০২ সালের ২৬ আগস্ট রাতে সাইফুল ও তার সহযোগিরা ফাতেহাকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী নদীতে একটি নৌকায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষকরা মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ধানের জামিতে লাশ ফেলে দেয়। পরদিন নিহত ফাতেহার বোন রৌশনা খাতুন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তৎকালিন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেন ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিজ্ঞ বিচারক এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে উপরোক্ত রায় প্রদান করেন এবং দন্ডিত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আলাল মিয়া ও আবদুল খালেক নামে দুই আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম।