রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন ॥ ’৭১ সালে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করেছে পুলিশ প্রশাসন। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম-পিপিএম (বার) এর উদ্যোগে বুধবার বিকেলে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৎকালীন এএসপি, ইন্সপেক্টর, এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল পদে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হালিম খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন আরআই মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন ইন্সপেক্টর অমরেন্দ্র লাল রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত এএসআই (এবি) মোঃ আব্দুল মন্নাফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল মোঃ নজরুল ইসলাম খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল এস এম মোস্তফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল মোঃ মকসুদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনেস্টবল আব্দুল মতিন তরফদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল দিলীপ কুমার ভট্টাচার্য্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল অখিল চন্দ্র দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত এএসআই আব্দুস সহীদ তরফদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল সৈয়দ বজলু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল মোস্তফা আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল সাধন চন্দ্র দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল হাজী আলী মুছাব্বির চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেতার চালক এসএম আমীরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কনস্টেবল আব্দুস ছামাদ ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত কনস্টেবল রঙ্গু মিয়াসহ অন্তত ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। এএসপি তৃপ্তি মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম-পিপিএম (বার), এডিশনাল এসপি এস এম ফজলুল হক, এডিশনাল এসপি মোঃ রবিউল ইসলাম, এডিশনাল এসপি রাজু আহমেদ, এডিশনাল এসপি শেখ মোঃ সেলিম, এসএসপি মোঃ নাজিম উদ্দিন, এএসপি মোঃ পারভেজ, এএসপি মানসুরা আক্তার ও ডিআই ওয়ান কাজী কামাল উদ্দিন। সভায় মুক্তিযোদ্ধারা সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসা প্রসঙ্গে বলেন, জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের এত বড় অপমান কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রকৃত রাজাকারদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে জেলা পুলিশের দেয়া এই সংবর্ধনাকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অতি সম্মান ও গৌরবের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অভিহিত করেন তারা। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ’৭১ এর রণাঙ্গনের স্মৃতিচারণ করলে উপস্থিত সকলেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অতি দ্রুত একটি সংকলন বের করার ঘোষনা দিয়ে বলেন, ’৭১ সালে পুলিশ সদস্য হিসেবে যে সব মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে এই দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ কাহিনী নিয়ে অতি দ্রুত একটি সংকলন বের করা হবে। এই সংকলন যেন ভবিষ্যত প্রজন্ম দেখে এইসব পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ও ’৭১ এর যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে। এই যোদ্ধাদের স্মৃতি বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস সংরক্ষণ থাকবে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, পুলিশ বিভাগে চাকুরীরত অবস্থায় যে সব মুক্তিযোদ্ধারা ’৭১ সালে যুদ্ধে অংশ নিয়ে এখনও সরকারি ভাতা পাচ্ছেন না, তারা যেন সরকারের নিকট তার মাধ্যমে আবেদন করেন। তিনি নিজেই এই ভাতা পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।